রাজধানীর ৩ এলাকায় ৩ জনের আত্মহত্যা
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২৩:৩০
ঢাকা: রাজধানীতে পৃথক এলাকায় নারীসহ তিন জন আত্মহত্যা করেছে। তিন জন হলেন- মতিঝিলের কমলাপুরের মাশরুর আলী আলমাস (৩৫), খিলগাঁও নন্দিপাড়ার তামান্না আক্তার (১৪) ও মোহাম্মদপুর রায়ের বাজারের স্বর্ণা আক্তার (২২)।
রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথক এই ঘটনাগুলো ঘটে। পরে তাদের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে তিন জনকেই চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
এদের মধ্যে রাজধানীর দক্ষিণ কমলাপুরে নিজ বাসায় রাত ৮টার দিকে গলায় ফাঁস দেয় মাশরুর আলী চৌধুরী আলমাস (৩৫) নামের এক যুবক। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে স্বজনরা ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক রাত ৯টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
আলমাসের ছোট ভাই মামনুন আলী চৌধুরী বলেন, ‘দক্ষিণ কমলাপুর জসিম উদ্দিন রোডে নিজেদের তিনতলা বাড়ি। আলমাস বেশ কিছুদিন সৌদিআরব ছিল। এক বছর আগে সে দেশে আসে। স্ত্রী শামিমা আক্তার ও এক মেয়েকে নিয়ে সে থাকতো। কয়েকদিন আগে স্ত্রী-সন্তানকে শ্বশুর বাড়ি সিলেট যায়। সেখানে স্ত্রী-সন্তানকে রেখে দু’দিন আগে ঢাকায় আসে।’
মামনুন আর বলেন, ‘আলমাস খুবই জেদি প্রকৃতির ছিল। স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে কিনা জানি না। রাত আটটার দিকে বাসায় ফ্যানের সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দেয় সে। পরে দেখতে পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে এলে মারা যায়।’
এদিকে, খিলগাঁও নন্দিপাড়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে তামান্না আক্তার (১৪) নামের এক কিশোরী। রাত পৌনে সাড়ে ৭টার দিকে সে গলায় ফাঁস দেয়। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে পৌনে ৯টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
তামান্নার বোন শাহনাজ আক্তার জানায়, তাদের বাড়ি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায়। বর্তমানে খিলগাঁও পশ্চিম নন্দিপাড়ায় ভাড়া থাকে তারা। বাবা খবির মিয়া ও মা অঞ্জনা বেগম এলাকায় ভ্যানে সবজি বিক্রি করে।
শাহনাজ আরও জানায়, সন্ধ্যায় ঘরে কাজ করছিল তামান্না। তখন মা অঞ্জনা বেগম অন্য কাজ করতে বলে। এতে মা-মেয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। অভিমানে তামান্না ঘরের গিয়ে ওড়না দিয়ে আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়। পরে দেখতে পেয়ে স্বজনরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
এদিকে, মোহাম্মদপুর রায়েরবাজার এলাকায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে স্বর্ণা আক্তার (২২) নামে এক তরুণী। সন্ধ্যা ৭টার দিকে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের পাশে টিনশেড বাসায় ঘটনাটি ঘটে। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ৮টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
স্বর্ণার মা সালমা বেগম জানান, তিন বছর আগে আশিক নামে এক ভ্যানচালকের সঙ্গে স্বর্ণার বিয়ে হয়। এক ছেলে জন্মের পর তাকে রেখে এক বছর আগে চলে যায় আশিক। রায়েরবাজারের বাসায় মা-মেয়ে একসঙ্গে থাকতো।
মা আরও জানায়, সন্ধ্যায় বাজার থেকে মাছ নিয়ে এসে স্বর্ণাকে কাটতে বলে। এ সময় স্বর্ণা মাছ কাটতে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে মা তাকে বকাঝকা করে। এতে অভিমান করে ঘরের আড়ার সাথে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দেয় স্বর্ণা। পরে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, মৃতদেহ তিনটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
সারাবাংলা/এসএসআর/পিটিএম