ঢাকা: ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের বিচার চাওয়ায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগী পরিবার। মামলার করার পরও গ্রেফতার না হওয়ায় চেয়ারম্যান ও তার লোকজন বেপরোয়া হয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে ওই তরুণীকে এলাকা ছাড়া করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী লামিয়া আক্তারের (১৯)।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। এসময় তার মা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে লামিয়া বলেন, আমি ঝালকাঠী জেলার নলছিটি উপজেলার সরই গ্রামের বাসিন্দা। আমার পিতা পেশায় একজন কৃষক। একই উপজেলার ৩ নং কুলকাঠী ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আক্তারুজ্জামান বাচ্চু (৪৫) আমাদের পূর্ব পরিচিত। সেই সুবাধে চাকরি দেওয়ার কথা বলে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর তিনি আমার পরিবারের সম্মতিতে আমাকে ঢাকায় দক্ষিণ বনশ্রীর ই ব্লকের ৯/২ নম্বর রোডের ১২৩ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে উঠান। ওই বাড়িতে মোরশেদা নামের এক নারী ছিলেন। এই মোরশেদার সহায়তায় চেয়ারম্যান ওই দিনই আমাকে ধর্ষণ করেন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে তারা ধর্ষণের দৃশ্য নেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এরপর গত ৬ জানুয়ারি একই বাসায় আবারও ধর্ষণ করে। সেখান থেকে গত ৭ জানুয়ারি আমাকে ছেড়ে দেয়। দ্বিতীয়বার ধর্ষণ করলে আমি গর্ভবতী হয়ে পড়ি। এরপর চেয়ারম্যান বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার গর্ভপাত ঘটায়। এরপর দিনের পর দিন বিয়ে না করেই চেয়ারম্যানের অত্যাচার বেড়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, এক পর্যায়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি আমি বাদী হয়ে খিলগাঁও থানায় বাচ্চু চেয়ারম্যান ও তার সহযোগী মোরশেদাকে আসামি করে একটি মামলা করি। এরপর থেকে বাচ্চু চেয়ারম্যান আরও বেপরোয়া হয়ে যায়। মামলার পরও গ্রেফতার না হওয়ায় এখন তিনি এবং তার সহযোগিরা আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকী দিচ্ছে। আসামীদের ভয়ে উল্টো আমিসহ পরিবারের সদস্যরা সবাই পালিয়ে বেড়াচ্ছি। তাকে গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি না করা হলে যেকোনো সময় আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের তিনি (আক্তারুজ্জামান বাচ্চু) মেরে ফেলতে পারেন বলে আশঙ্কা করছি।
এ ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি মহোদয়ের সহায়তা কামনা করেন ভুক্তভোগী লামিয়া আক্তার।
এ ব্যপারে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বাচ্চুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার দুটি মোবাইল ফোনই বন্ধ পাওয়া যায়।