গৃহকর্মীকে নির্যাতন: জামিন বাতিল হয়নি গৃহকর্ত্রীর
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৬:৫১
ঢাকা: গৃহকর্মী ফারজানা আক্তারকে নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গৃহকর্ত্রী সামিয়া ইউসুফ সুমির জামিন বাতিলের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শুভ্রা চক্রবর্তীর আদালত এই আদেশ দেন।
এদিন আসামির পক্ষে আইনজীবী ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মামুন স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। অন্যদিকে আসামির জামিন বাতিলের জন্য গত ৩১ জানুয়ারি দাখিল করা আবেদনের ওপর রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান এবং বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহিদুর রহমান মিয়া ও আরিফুল ইসলাম শুনানি করেন।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, শুনানি শেষে আদালত জামিন বাতিলের আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং এই মামলার শুনানির পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত আসামির জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে দেন।
নির্মম নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী ফারজানা গত ১৭ জানুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩৫ দিন রাজধানীর শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
ফারজানা আক্তারের বাবা বলেন, আসামির লোকজন আমার কাছ থেকে কাগজে সই নিয়েছে। সেই কগজে লিখেছে, অভিযোগ সত্য নয়। আমার জামিনে আপত্তি নাই। সেই কাগজ দেখায়ে নাকি জামিন নিছে। আমি লেখাপড়া জানি না। কী লেখা ছিল, জানি না। আমরা আদালতে জামিন বাতিলের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আদালত বাতিল করেন নাই।
মামলায় অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালে থাকা-খাওয়া ও মাসিক দুই হাজার টাকা দেওয়ার চুক্তিতে ফারজানাকে গৃহকর্মী হিসেবে কাজে নেন সামিয়া ইউসুফ সুমি (৩২)। পরে বিভিন্ন সময় ফারজানা তার পরিবারকে ফোনে জানায়, সুমি তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন, মারধর করেন এবং ঠিকমতো খাবার দেন না। এর মধ্যে গত ১৭ জনুয়ারি সুমি ফোন করে ফারজানার পরিবারকে জানায়, ফারজানা খুব অসুস্থ। ওই দিনই ফারজানার মা-বাবা সুমির বাসায় এসে মেয়েকে অচেতন দেখতে পান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই দিনই ফারজানাকে শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন তার মা-বাবা। ফারজানা কিছুটা সুস্থ হলে জানায়, কাজে যোগ দেওয়ার পর থেকেই সুমি বিভিন্ন সময় তুচ্ছ কারণেও তাকে মারধর করে আসছেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ১৫ জানুয়ারি ঘর গোছানো ও বাসন-পত্র ভেঙে ফেলার মিথ্যা অভিযোগে ও কাজে দেরি হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে সুমি ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন ফারজানাকে। এক পর্যায়ে লোহার খুন্তি গরম করে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাকা দেন। এতে করে ফারজানার শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়।
সারাবাংলা/এআই/টিআর