কংগ্রেসের সমর্থন পাননি সেলিম, সিপিবি’র নেতৃত্বে আসছে নতুন মুখ
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২৩:৫৮
ঢাকা: দ্বাদশ কংগ্রেসে তৃতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি পদে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন পাননি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। ফলে দেশের ঐতিহ্যবাহী এই বামপন্থি সংগঠনের নেতৃত্বে আসতে যাচ্ছে নতুন মুখ। পার্টির ৪৮৬ কংগ্রেসের গোপন ব্যালটে ভোট দিয়েছেন সেই নেতৃত্ব নির্বাচনে। সেই ভোটেই নির্বাচিত হতে যাচ্ছে সিপিবি’র পরবর্তী নেতৃত্ব।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সিপিবি’র দ্বাদশ কংগ্রেসের শেষ দিনে কংগ্রেসরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। রাত সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভোটগণনা চলছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভোটগণনা শেষ করতে আরও কিছু সময় লাগবে।
সিপিবি’র একাধিক কংগ্রেস জানিয়েছেন, কাউন্সিলে একজন কংগ্রেস মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমকে ফের সিপিবি সভাপতি পদে রাখার জন্য গঠনতন্ত্রে সংশোধনীর প্রস্তাব রাখেন। তবে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম নিজে আরেক মেয়াদে সভাপতি পদে থাকার বিষয়ে অনাগ্রহ জানিয়ে গঠনতন্ত্র সংশোধনীর ওই প্রস্তাব প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। ওই কংগ্রেস তার প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নিলে সংশোধনী প্রস্তাব সংক্রান্ত বিষয়গুলো গতকাল রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) নিষ্পত্তি হয়ে যায়।
একাধিক কংগ্রেস সারাবাংলাকে জানান, আজ সোমবার নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের সেশনে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ফের সভাপতি পদে থাকার আগ্রহ থেকে এক জন কংগ্রেসকে দিয়ে গঠনতন্ত্র সংশোধনী প্রস্তাব করান। আগের দিনই এ সংক্রান্ত সংশোধনী প্রস্তাব নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার পরও নতুন করে এই সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপনে কংগ্রেসে হট্টগোল শুরু হয়। পরে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য গোপন ভোটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পার্টির একাধিক সূত্র সারাবাংলাকে জানিয়েছে, গঠনতন্ত্র সংশোধনী বিষয়ক এই গোপন ভোটে অংশ নেন ৪৮৬ জন কংগ্রেস। ভোটে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের পক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পড়েনি। ফলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের পক্ষে তৃতীয় মেয়াদে সিপিবি পথে থাকার সুযোগ রুদ্ধ হয়ে যায়। পরে কংগ্রেস নতুন সভাপতিসহ কেন্দ্রীয় কমিটির ৪৩ জন সদস্য নির্বাচনে নতুন করে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
পার্টির সংশ্লিষ্টরা জানান, সোমবার দুপুরেই পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ৪৩ জন প্রতিনিধি নির্বাচন করতে ভোট দেন ৪৮৬ জন কংগ্রেস। রাত সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভোটগণনা শেষ হয়নি। কংগ্রেস সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভোটগণনা শেষে নতুন কমিটি ঘোষণা করতে মধ্যরাত পেরিয়ে যাবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভোটগণনায় নির্বাচিত ৪৩ জন সদস্যই আগামীকাল মঙ্গলবার (১ মার্চ) বৈঠক করে গঠনতন্ত্রের নির্দেশনা অনুসরণ করে অথবা গোপন ব্যালটে মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আগামী চার বছরের জন্য পূর্ণাঙ্গ কমিটি মনোনীত বা নির্বাচিত করবেন।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, অস্বাভাবিক কিছু না ঘটলে সিপিবি’র বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলমই দলটির সভাপতি হতে যাচ্ছেন। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে সাজ্জাদ জহির চন্দন, রুহিন হোসেন প্রিন্স ও আব্দুল্লাহ আল কাফি রতনের মধ্যে যে কেউ দায়িত্ব পেতে পারেন। তবে এর মধ্যে রুহিন হোসেন প্রিন্সের সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছেন অনেকেই।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রুহিন হোসেন প্রিন্স ও আব্দুল্লাহ আল কাফি রতন পার্টির জন্য সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকেন। এছাড়া নব্বইয়ের দশকে পার্টির দুঃসময়ে রুহিন হোসেন প্রিন্সের অবদান অনস্বীকার্য। ফলে সাধারণ সম্পাদক পদে তাকেই দেখতে পাওয়া যেতে পারে। অন্যদিকে অপেক্ষাকৃত তরুণ হলেও কাফি রতনও রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট অগ্রসর। ফলে সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক পদে তাকেও অনেকেই যোগ্য মনে করেন।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর
কাফি রতন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম মো. শাহ আলম রুহিন হোসেন প্রিন্স সিপিবি সিপিবির কংগ্রেস সিপিবির দ্বাদশ কংগ্রেস সিপিবির নেতৃত্ব