‘জমি অধিগ্রহণ লাগলেই ছবি তুলে রাখতে হবে, যেন ঘর বানাতে না পারে’
২ মার্চ ২০২২ ১৯:১০
ঢাকা: কোনো প্রকল্পের প্রয়োজনে জমি গ্রহণ করতে হলে আগে থেকেই সেখানকার ছবি তুলে রাখতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জমি অধিগ্রহণের খবর শুনে স্থাপনা নির্মাণ বা বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে যেন অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া জটিল না হয়, সে কারণেই এমনটি করতে বলেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোথাও জমি অধিগ্রহণের চিন্তা করা হলে আগেই সেখানকার ছবি তুলে রাখতে হবে, যেন পরবর্তী সময়ে অধিগ্রহণের খবর শুনে মানুষ বাড়িঘর বানাতে বা গাছপালা লাগাতে না পারে। সেই সঙ্গে অধিগ্রহণ করা জমির টাকা মানুষ যেন দ্রুত পায়, সেজন্য অর্থছাড় প্রক্রিয়া সহজ ও ক্ষিপ্র করতে হবে। এক্ষেত্রে জটিলতা কমাতে হবে।
বুধবার (২ মার্চ) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে এনইসি চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গণভবন থেকে সভাপতিত্ব করেন তিনি। পরে বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন— কোনো অবকাঠানো বা রাস্তাঘাট নির্মাণ প্রকল্পে বৈদ্যুতিক খুঁটি বা অন্য কিছু সরানোর জন্য আলাদা কোনো প্রকল্পের প্রয়োজন নেই। কেননা দেখা যাবে, এই প্রকল্প দেখভাল করতেই আবার প্রকল্প নিতে হচ্ছে!
আরও পড়ুন- সংশোধিত এডিপিতে বাদ গেল ১৭ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা
ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, দেশে মূল্যস্ফীতি একটু বাড়লেও তা আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। কেননা আমেরিকা ও ভারতসহ বিশ্বের অনেক বড় দেশের তুলনাতেও আমাদের মূল্যস্ফীতি কম।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত পরিস্থিতি নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমার যুদ্ধের পক্ষে নই। আমরা শান্তির পক্ষে। রাশিয়া ও ইউক্রেন— দু’টিই আমাদের বন্ধুদেশ। রাশিয়া মুক্তিযুদ্ধে আমাদের অনেক সহায়তা করেছে। তা না হলে ৩০ লাখের পরিবর্তে হয়তো ৬০ লাখ মানুষকে জীবন দিতে হতো।
তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার ঘটনায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কোনো প্রভাব পড়বে না। কারণ এটি হচ্ছে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ভিত্তিতে। এছাড়া করোনা মহামারির মতো যুদ্ধেও রাশিয়া প্লেন ভাড়া করে লোকবল ও যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে এখানকার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তবে হিট থাকলে তাপ কিছুটা আসবেই। দেখতে হবে আমাদের চামড়া কিংবা লোম কতটা পুড়ে যায়।
বৈদেশিক অর্থের ব্যবহার কেন কমে— এমন প্রশ্নের জবাবে ব্রিফিংয়ে আইএমইডি সচিব আবু হেনা মোর্শেদ জামান বলেন, উন্নয়ন সহযোগীদের নানা শর্ত থাকে। এর চেয়ে বড় কথা— পরামর্শক ও যন্ত্রপাতি আনতে হয় বিদেশ থেকে, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে সেই প্রক্রিয়া বাঁধাগ্রস্ত হয়েছিল। এ কারণে এত টাকা কমাতে হয়েছে।
এনইসি বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মামুন-আল-রশীদ, মোসাম্মৎ নাসিমা বেগমসহ অন্যরা।
এর আগে, এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এনইসি বৈঠকে চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে মূল এডিপির তুলনায় সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ কমেছে ১৭ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা। এর ফলে ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা থেকে সংশোধিত এডিপি কমে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭ হাজার ৫৫০ কোটি টাকায়।
সারাবাংলা/জেজে/টিআর
আরএডিপি এনইসি বৈঠক জমি অধিগ্রহণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশোধিত এডিপি