বৌদ্ধ মহাবিহারের অধ্যক্ষের মরদেহে বিএনপির শ্রদ্ধা
৩ মার্চ ২০২২ ১৯:১৩
ঢাকা: বাসাবোর ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের অধ্যক্ষ সংঘনায়ক ভদন্ত শুদ্ধানন্দ মহাথেরোর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) দুপুরে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বাসাবো ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় নেতা গৌতম চক্রবর্তী, সুশীল বড়ুয়া, মহানগর বিএনপির হাবিবুর রশীদ হাবিব, ইউনুস মৃধাসহ অন্যরা।
২০২০ সালে ৩ মার্চ শুদ্ধানন্দ মহাথেরো ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৭ বছর।
করোনা মহামারীর কারণে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার এই অনুষ্ঠান ওই সময়ে হয়নি। দুই বছর পর ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারে তিন দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠান-ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান হয়।
দুপুর ১২টায় বাসাবো ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব প্রথমে বিহারের মূল ভবনের দোতলায় গ্লাসের ভেতরে রক্ষিত ভদন্ত শুদ্ধানন্দ মহাথেরোর মরহেদে দলের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন এবং তার স্মৃতির প্রতি সন্মান জানাতে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে বিএনপি মহাসচিব যান মূল প্যান্ডেলে। সেখানে তিনি বক্তব্য রাখেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসেছি। এরই মধ্যে তার মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি। আমরা প্রত্যাশা করছি, আগামীকাল তার মরদেহ যে দাহ করা হবে, এই পৃথিবী থেকে বিদায় দেওয়া হবে অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে, তা সফলভাবে সমাপ্ত হবে।’
তিনি বলেন, ‘মহান শুদ্ধানন্দ মহাথেরোর যেন পরলোকে শান্তিতে থাকেন। আমরা প্রার্থনা করব সৃষ্টিকর্তা যেন আমাদের এই পৃথিবীকে শান্তিময় করে দেন। আমরা প্রার্থনা করব এই বাংলাদেশকে তিনি যেন শান্তিময় করে দেন। আমরা যেন সত্যিকার অর্থেই একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র, পরস্পরের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বমূলক-সৌহার্দ্যমূলক রাষ্ট্রে বাস করতে পারি আনন্দের সঙ্গে, প্রেমের সঙ্গে, ভালোবাসার সঙ্গে।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, বাংলাদেশ আমার দেশ। আমরা মনে করি, এখানে যারা বাস করেন সব মানুষই বাংলাদেশি। এখানে ধর্ম আলাদা, একেক জনের একেকটা ধর্ম হতে পারে, চিন্তাভাবনা আলাদা হতে পারে। কিন্তু একটা জায়গায় এসে আমরা সবাই বাংলাদেশি। নিজ দর্শনের মাধ্যমে যিনি এই তত্ত্ব আমাদের দিয়েছেন, তিনি আমাদের স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এই বাংলাদেশি দর্শনের মধ্য দিয়ে আমাদের দেশের সব মানুষকে একত্রিত করতে সক্ষম হব। আমরা বিভাজনের রাজনীতি করি না। আমরা সবসময়ে ঐক্যের রাজনীতি করি। বাংলাদেশকে যদি সমৃদ্ধ করতে হয়, বাংলাদেশকে যদি সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হয়, তাহলে এখানে অবশ্যই সব বাংলাদেশিরদের মাঝে ইস্পাতকঠিন ঐক্য দরকার আছে।’
ফখরুল বলেন, ‘এখানে ধর্মের মধ্যে যে হানাহানি সেই হানাহানি বাংলাদেশে সবচেয়ে কম। এটা বাস্তবতা। কিন্তু কিছু কুচক্রি মাঝে-মধ্যে বিভাজন তৈরি করে। কিন্তু বাংলাদেশি মানুষ আজীবন হাজার বছর করে এখানে একইসঙ্গে ভাইয়ের মতো বাস করেছে। বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের সব জায়গায় পড়েছে। কারণ, এটি শান্তির ধর্ম, এটি কল্যাণের ধর্ম। মানুষের কল্যাণের জন্য এই ধর্ম প্রচার করা হয়।’
অনুষ্ঠানে বিএনপির আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুস সালাম, গৌতম চক্রবর্তী, সুশীল বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন।
সারাবাংলা/এজেড/টিআর