লাশের সঙ্গে যৌনাচার: পাহারাদার রিমান্ডে
৩ মার্চ ২০২২ ২০:৫৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরে মৃত এক শিশু ও এক নারীর সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের অভিযোগে গ্রেফতার ব্যক্তি দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে গ্রেফতার সেলিম জবানবন্দি দেন।
মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডির পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘গ্রেফতারের পর আদালতের নির্দেশে আমরা সেলিমকে তিনদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদে সেলিম একাই দুই মৃতদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের বিষয়টি স্বীকার করেন। রিমান্ড শেষে আজ (বৃহস্পতিবার) আমরা তাকে আদালতে হাজির করি। আদালতে সে ১৬৪ ধারায় দায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।’
গ্রেফতার মো. সেলিম (৪৮) কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার সাতেশ্বর গ্রামের মৃত নোয়াব আলীর ছেলে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরে অস্থায়ী ভিত্তিতে সেলিম পাহারাদার হিসেবে কাজ করত। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে চমেক হাসপাতাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
সিআইডির ভাষ্য অনুযায়ী- ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নগরীর চকবাজার থানা পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর শিকার আনুমানিক ৩২ বছর বয়সী এক নারীর লাশ উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। একই বছরের ২৫ মে নগরীর চান্দগাঁও থানা পুলিশ ১২ বছর বয়সী এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়, যার মৃত্যুও হয়েছিল অস্বাভাবিকভাবে। ময়নাতদন্তের সময় চমেকের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ওই নারী ও শিশু মৃত্যুর পূর্বে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন কি না, সেটা জানতে আলামত সংগ্রহ করে ঢাকায় সিআইডির ল্যাবে পাঠান। ল্যাবে পরীক্ষায় দু’জনের ভ্যাজাইনাল টিস্যু থেকে একই ধরনের বীর্যের উপস্থিতি পাওয়া যায় এবং ডিএনএ পরীক্ষায়ও দেখা যায়, দু’জনকে ধর্ষণকারী একই ব্যক্তি।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশে অনুসন্ধানে নামে সিআইডি। উভয়ের সুরতহাল প্রতিবেদনে দেখা যায়, মৃত্যুর পূর্বে ধর্ষণের কোনো আলামত, বলপ্রয়োগে আঘাতের কোনো চিহ্ন তাদের শরীরে ছিল না। অনুসন্ধানে সিআইডি কর্মকর্তারা নিশ্চিত হন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের লাশঘরে লাশগুলো যখন ছিল, তখন সুযোগ বুঝে সেলিম মৃতদেহগুলোর সঙ্গে বিকৃত যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হয়।
সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার পর সেলিমের বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩৭৭/১০৯ ধারায় সিআইডির উপ-পরিদর্শক (এসআই) কৃঞ্চকমল ভৌমিক বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন।
সারাবাংলা/আরডি/একে