‘সরকার পতনের জন্য’ নতুন রাজনৈতিক জোট হচ্ছে
৫ মার্চ ২০২২ ১৩:০৪
ঢাকা: জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, শাসনব্যবস্থাকে ‘গ্রহণযোগ্য করা’ সর্বোপরি আওয়ামী লীগ সরকারের ‘পতন ঘটানো’র জন্য নতুন একটি রাজনৈতিক মোর্চা গঠন করা হচ্ছে। মোর্চার উদ্যোগ গ্রহণকারীরা এরইমধ্যে ছয়টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে। দেশের অন্যতম বিরোধী দল বিএনপি চাইলেও এই রাজনৈতিক মোর্চায় তাদের স্বাগত জানানো হবে।
এ মাসের মধ্যে রাজনৈতিক মোর্চার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। মোর্চার নাম হবে ‘নাগরিক মঞ্চ’ অথবা ‘গণতন্ত্র মঞ্চ।’ এই মোর্চায় স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিগুলো ছায়াতলে আসবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টতের মতে— বিএনপি যেভাবে চলছে তাতে ভবিষ্যতে তারা নির্বাচনের গাড়ি মিস করতে পারে। সে জন্য বিএনপির সঙ্গে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তেমন আলোচনা হয়নি। এ ছাড়া বিএনপির ‘থিংক ট্যাংক’ নামে পরিচিত ডা. জাফরুল্লাহ যেভাবে ‘উল্টাপাল্টা’ বক্তব্য রাখছেন সে ক্ষেত্রে তাকে এই জোটে রাখার ক্ষেত্রে দ্বিমত রয়েছে। তিনি যে কার সে প্রশ্ন উঠেছে? পাশাপাশি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুর রাজনৈতিক ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এ সব নিয়ে চলছে সম্ভাব্য দলগুলোর সঙ্গে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
তাদের মতে এ জোটের রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং লক্ষ্য উদ্দেশ্য কী হবে সে বিষয় নিয়ে লিখিত দলিল তৈরি হতে পারে। সেই দলের প্রতি বিএনপি’র সমর্থন থাকলে তারাও জোটে আসতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে— এই ঐক্য করার জন্য নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, জাসদ নুরুল আম্বিয়া বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাইফুল হক, ন্যাশনাল পিপলস লীগ, স্বাধীনতার স্বপক্ষের রাজনৈতিক দল ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনসহ সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গরা এই জোটের বা মঞ্চের শরিক হচ্ছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন— বাম গণতান্ত্রিক জোটের দলগুলো এই মঞ্চ থেকে একই সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি পালনের কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন— এরইমধ্যে ঐক্য করার জন্য জাসদের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব এর বাসভবন, গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টুর বাসভবনসহ একাধিক স্থানে বৈঠক হয়েছে। প্রাথমিক এসব বৈঠকে একটি মঞ্চ করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই মঞ্চের কার্যক্রম কী হবে, সেসব বিষয় নিয়ে একটি লিখিত এজেন্ট দেওয়া বক্তব্য প্রস্তুতির কাজ চলমান রয়েছে। তাদের মতে শিগগিরই এই জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটবে।
এ সব বিষয় নিয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘জাসদের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব আর অনুষ্ঠানে বলেছেন, বঙ্গবীর কথা আছে। আমরা আলাদাভাবে কথা বলব। তিনি আমাকে এখনও ডাকেননি। ডাকলে আমি যাব। হয়ত এ সব বিষয়ে আমাদের মধ্যে কথা হতে পারে।’
গণফোরাম সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাবেক দলীয় এমপি মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, ‘একটি মোর্চা বা ঐক্য গড়ার আলোচনা চলছে। এ মুহূর্তে এর বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না।’
এ সব বিষয় নিয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক জানান, একটি নাগরিক ঐক্য বা গণতান্ত্রিক মঞ্চ নামে ব্যানারে স্বাধীনতার স্বপক্ষে রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে একটি হবে। এ নিয়ে আলোচনা চলছে। কবে এই জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটে তা বলা যাচ্ছে না। তবে আশা করি শিগগিরই এই জোটের আত্মপ্রকাশ হবে।
নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘যে নামেই হোক, একটি ঐক্য গড়ার চেষ্টা চলছে। আশা করি, শিগগিরই কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামব।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘দেশের জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত ও জনগণের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে এবং গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার জন্য অনেক আগে থেকেই আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি। এরই ধারাবাহিকতায় একটি গণতান্ত্রিক মঞ্চ বা নাগরিক মঞ্চ যে নামেই হোক সকলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা আশা করি, এ মঞ্চ থেকেই সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হবে।’
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে