Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘রাজনীতি ছেড়ে বিএনপি নেতাদের থিয়েটার করা উচিত’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৫ মার্চ ২০২২ ১৮:৩১

ঢাকা: রাজনীতি ছেড়ে বিএনপি নেতাদের থিয়েটার করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন দলটির পুনর্গঠনের উদ্যোক্তা কামরুল হাসান নাসিম।

শনিবার ( ৫ মার্চ) রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্ট সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় বাংলাদেশের রাজনীতি, বিএনপি পুনর্গঠন এবং বৈশ্বিক রাজনীতি নিয়েও কথা বলেন নাসিম।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কার্যত রাজনীতি নেই। কেউ রাজনীতি করছে না। বিরোধী শিবির থেকে টুকটাক রাজনীতি বাম শিবিরে গেলেও গত একযুগ ধরে তারাও রাজনীতি করতে পারছে না। কারণ, ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে ‘রাষ্ট্র’, ‘উন্নয়ন’ ও সরকারের বেশ কয়েকটি ‘টেকনিক্যাল উইং’ কাজ করছে। আর ওই উইংগুলোই বিশাল জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে বেশ সাফল্য দেখিয়েছে।’

‘অনেকদিন ধরে জামায়াত ও অপরাপর ইসলামী দলগুলোও সুবিধা করতে পারছে না। এ ক্ষেত্রে মধ্যপন্থী দল হিসেবে বিএনপি সবার আদর্শ হতে পারত। কিন্তু দলটি তো পাঁচটি অসুখে ভুগছে দীর্ঘ সময় ধরে, তা আগেই বলেছি। বিএনপি নেতাদের এখন আর কেউ বিশ্বাস করে না। কারণ, তাদের অনেকেই অভিনয় করে রাজনীতি করছেন। তাদের এখন উচিত বেইলি রোডে থিয়েটার গড়ে সরাসরি অভিনয় পেশায় চলে যাওয়া’— বলেন কামরুল হাসান নাসিম।

তিনি বলেন , ‘আগামী ঈদ উল ফিতরের আগেই বিএনপি পুনর্গঠনে দলের নয়া পল্টন কেন্দ্রিয় কার্যালয়ের সামনে প্রতীকী উচ্চ আদালত বসবে। হতে পারে তা ২২ মার্চ থেকে ২ এপ্রিলের মধ্যে। সেই আদালত বসে যাওয়ার পরই গেল ২৫ বছরের মধ্যে যারা দলের কাউন্সিলর হিসেবে ছিলেন, তাদের ডাকা হবে। অতঃপর একটি ক্রেডিবল কাউন্সিল করার মধ্য দিয়ে দলকে ঢেলে সাজাতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

কামরুল হাসান নাসিম বলেন, ‘এরপর আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনীতিতে মনোযোগী হব এবং আমরা কী করতে চাই, তা জনগণের কাছে তুলে ধরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে চ্যালেঞ্জ করতে মাঠে নেমে যাব। ঘর ঠিক না করে, দলের মধ্যে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না করে ‘‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই’’—এমন কথা বলা অর্থহীন ও হাস্যকর। আমরা নিজেরা যদি প্রমাণ করতে পারি, বিএনপি জামায়াতবাদী দল নয়- গণতান্ত্রিক দল, তখনই কেবল আমরা বলতে পারব, ‘‘এই তোমরা কেন ভোট চুরি করে রাতের আঁধারে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় চলে যাচ্ছো’’।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি যা বলছি, তা পৃথিবীর কোনো সংবাদ মাধ্যম বা বিশ্লেষক বলছে না বা বলবে না। ন্যাটো, গ্যাস, ব্যবসা, অস্ত্র- যাই বলা হোক না কেন, এগুলোর সঙ্গে এই যুদ্ধের কোনো যোগাযোগ নেই। সাধারণ আলোচনায় যেয়ে বলা যায়- আব্রাহামীয় ধর্মসমূহ এবং একটি বিশেষ অঞ্চলকেন্দ্রিক লড়াই আসন্ন, যা ২০২২ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে সামনে চলে আসবে। সে লড়াইটা শুরুটা হলো মাত্র। এখন আপনারা দেখতে থাকুন। বাংলাদেশের উচিত হবে পর্যবেক্ষণ করা। পক্ষ-বিপক্ষ স্পষ্ট করার প্রয়োজন নেই। এখন ক্ষমতা ও বৈশ্বিক প্রভাবের একট্টা রোমান্সে ক্ষমতসীন আওয়ামী লীগ কী করবে, তা দেখতে থাকব।’

২০১৫ সালের ৯ জানুয়ারি নাসিম দলের পুনর্গঠন চেয়ে আলোচনায় আসেন। অতঃপর ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী জনতার নিম্ন আদালত বসাতে তিনি সক্ষম হন। দলের ৫টি অসুখ হয়েছে বলে তিনি বাদী হিসেবে সে সময় দাঁড়িয়ে যেয়ে উপস্থিত জাতীয়তাবাদী জনতার কাছে দুইটি রায় চান। একটি হলো, দলের গঠনতন্ত্র স্থগিত করা। দুই, দলের কেন্দ্রিয় কার্যালয়ের সামনেই বসবে জাতীয়তাবাদী জনতার উচ্চ প্রতীকী আদালত। অসুখগুলো হলো, দল জাতীয়তাবাদী থেকে জামায়াতেবাদী হয়ে পড়েছে, দলটি নাশকতাকে সঙ্গী করেছে, বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, দল পরিচালনায় বেগম জিয়া ও তারেক রহমান ব্যর্থ এবং জনস্বার্থ সংরক্ষণের রাজনীতি করা হচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

নাসিম এরপরেই তার আহুত কর্মসূচিকে দলীয় বলে ঘোষণা করে এবং বিপ্লবের মহড়া হিসেবে দল ও তার অনুসারীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২০১৬ সালে ২ জানুয়ারি, ১৭ জানুয়ারি, ৫ সেপ্টেম্বর ও ১৭ নভেম্বর চারবার করে গেলে প্রত্যেকবারই প্রতিহত হয়ে ফিরে আসে।

সারাবাংলা/এজেড/আইই

কামরুল হাসান নাসিম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর