জুতার ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা সিন্ডিকেট, গ্রেফতার ৪
৫ মার্চ ২০২২ ২৩:৩৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায় টানা দু’দিন অভিযান চালিয়ে পাঁচ লাখ ইয়াবাসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মিয়ানমার সীমান্তবর্তী কক্সবাজারের একটি বড় ইয়াবা সিন্ডিকেটের প্রধান হেলাল-তারেকসহ তিনজনকে গ্রেফতারের সূত্র ধরে চট্টগ্রাম নগরীতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় এক জুতা ব্যবসায়ীকে। জুতার ভেতরে করে এই ব্যক্তি চট্টগ্রামের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলায় ইয়াবা পাচার করতেন বলে তথ্য পেয়েছে র্যাব।
শুক্রবার (৪ মার্চ) দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় অভিযান চালিয়ে দুই লাখ ইয়াবাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরা হল- হেলাল উদ্দিন (২৭), মো. তারেক (২৩) এবং নুরুল আমিন (১৯)।
তাদের দেওয়া তথ্যে চট্টগ্রাম নগরীর ঘাটফরহাদবেগ এলাকায় একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে জাকির হোসেন (৫০) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। তার বাসায় ট্রলিব্যাগে মজুদ রাখা তিন লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। জাকির নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকার দিয়া সু স্টোর নামে একটি জুতার দোকানের মালিক। খুচরা জুতা বিক্রির পাশাপাশি তিনি দিয়া সুজের পরিবেশক হিসেবে বিভিন্ন জেলায় পাইকারিভাবে জুতা সরবরাহ করেন বলে র্যাবের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ সারাবাংলাকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কক্সবাজারের উখিয়ায় মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে তারেককে গ্রেফতার করা হয়। তার বাড়ির আঙ্গিনায় মাটি খুঁড়ে মজুদ রাখা দুই লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। তারেক এ সময় তার দুই প্রধান সহযোগীর নাম প্রকাশ করলে হেলাল ও নুরুল আমিনকে গ্রেফতার করা হয়।
এই তিনজনের তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার দুপুরে নগরীর ঘাটফরহাদবেগ এলাকায় অভিযানে যায় র্যাবের টিম। জাকিরকে গ্রেফতারের পর তার বাসায় তল্লাশিতে মেলে আরও তিন লাখ ইয়াবা।
এম এ ইউসুফ বলেন, ‘মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী কক্সবাজার-বান্দরবান কেন্দ্রিক অন্যতম বড় ইয়াবা সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক তারেক ও হেলাল। এই সিন্ডিকেটের অধীনে অনেক পাচারকারী আছে, যারা ছোট-বড় ইয়াবার চালান নিয়ে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে পৌঁছে দিতেন। চট্টগ্রামে সিন্ডিকেটের মূল প্রতিনিধি হচ্ছেন দিয়া সু স্টোরের মালিক জাকির। কক্সবাজার-বান্দরবান থেকে মোটরসাইকেলে করে পাচারকারীরা ইয়াবা নিয়ে আসত জাকিরের কাছে। পৌঁছে দিত ঘাটফরহাদবেগে জাকিরের বাসায়। জাকির সেগুলো জুতার প্যাকেটে এবং জুতার মধ্যে ঢুকিয়ে পৌঁছে দিত ফেনী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে।’
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, ঘাটফরহাদবেগের বাসায় জাকিরের পরিবারের কেউ থাকে না। আবাসিক ভবনে বাসা ভাড়া নিয়ে জুতার গুদাম বানিয়েছিল জাকির। সেই বাসাকেই চট্টগ্রাম থেকে ইয়াবা পাচারের মূল ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করতো। গ্রেফতার হেলাল, তারেক ও নুরুল আমিন ইয়াবার ব্যবসা করে অল্প বয়সেই ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছে। এলাকায় নিজেদের প্রদর্শন করে অর্থবিত্তের লোভ দেখিয়ে তরুণ-যুবক এবং নারীদের ইয়াবা পাচারে উদ্বুদ্ধ করতো তারা।
পাঁচ লাখ ইয়াবার এই চালান চলতি বছরে আটক করা ইয়াবার সবচেয়ে বড় চালান বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা এম এ ইউসুফ।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম