গফরগাঁওয়ে জমজমাট গ্রামীণ মেলা
১৩ এপ্রিল ২০১৮ ২২:০০
।। এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
গফরগাঁও থেকে: গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে ছোটো ছোটো শিশুরা এসে খেলনার দোকানগুলোতে জটলা পাকিয়েছে। চোখের সামনে থাকা বাঁশি, বেলুন, চশমা, পিস্তল, গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের খেলনা দেখে দারুণ খুশি তারা। এসব খেলনা কিনে দিতে অভিভাবকদের কাছে বানয়া ধরছে শিশুরা।
শুক্রবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার মাইজবাড়ী গ্রামের চৈত্র সংক্রান্তি মেলার দৃশ্য এটি। এই মেলায় উপজেলার নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ভীড় জমায়। তবে শিশু এবং গৃহিনীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
চৈত্র সংক্রান্তির এই মেলা চৈত্র মাসের শেষ শুক্রবার উদযাপিত হয়। এবার প্রথমবারের মতো দু’দিনব্যাপী চলছে এই মেলা। বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) শুরু হওয়া এ মেলা চলবে শুক্রবার রাত ১২ টা পর্যন্ত।
খেলনার দোকানগুলোতে জটলা পাকানো সব শিশুরা তাদের প্রিয় সব খেলনা কিনতে পেরেছিলো কি না, তা জানা না গেলেও, এদিন কোন শিশুকেই মন খারাপ করে ফিরতে দেখা যায়নি। মেলায় এসে পরিবারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করে দারুন খুশি ছিলেন তারা।
মাইজবাড়ী গ্রামের এই মেলায় মাটির তৈরী বিভিন্ন জিনিসপত্রের দোকান, বাহারি খেলনার দোকান, মিষ্টান্ন ও খাবারের দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রীর দোকান চোখে পড়ে।
মেলায় ঘুরতে আসা শিশু আবিদ হাসানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো প্লাস্টিকের খেলনা তার ভীষণ পছন্দের। তিনি একই সঙ্গে চার-পাঁচটি খেলনা কিনতে চান। তবে তার এই দাবি তার বাবা-মা মানছেন না। এই জন্য তার চোখে-মুখে অভিমান।
মাইজবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা তরুণ মাজহারুল ইসলাম তমাল জানান, বছরের এই মেলা তিনি দারুন উপভোগ করেন। তবে তিনি একাই এসেছিলেন মেলাতে। পরিবারের জন্য নানা রকম উপহার সামগ্রী।
কাল দিনের আলো ফুটলেই শুরু হবে বাংলা বছরের নতুন দিন। দেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলা বছরের শেষ মুহুর্তে মেলা। এই মেলা তাই গ্রামবাসীর কাছে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। পরিবার পরিজনকে নিয়ে সবাই দল বেধে ঘুরতে এসেছেন মেলায়।
কুকসাইর গ্রামের বাসিন্দা দেলওয়ার হোসেন শিপু পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছিলেন। পেশায় তিনি শিক্ষক। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলার বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখছেন এবং সামর্থের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পছন্দের জিনিস কিনেছেন তিনি।
মেলায় তালপাতার পাখা বিকি-কিনি চোখে পড়ার মতো। গ্রামের মেলাগুলোর অন্যতম আকর্ষণ লাল গুড়ের জিলাপি। এই জিলাপির দোকানগুলোতে প্রচুর ভীড়। কিনছেন সব শ্রেণী পেশার মানুষ।
জিলাপির দোকানদার আব্দুস সালাম জানান, বছরের এই সময়টার জন্য অপেক্ষায় থাকেন তারা। এই সময় প্রচুর বিক্রি হয়। তাই নির্দিষ্ট দামে পরিমাণে বেশি দিলেও ব্যবসার কোনো ক্ষতি হয় না। মেলায় এসে কম-বেশি সবাই মিষ্টান্ন কিনতে পছন্দ করেন বলে জানান তিনি।
সারাবাবাংলা/ইএইচটি/এমআইএস