অপহরণের শিকার কলেজছাত্রীকে উদ্ধার, গ্রেফতার ৩
৮ মার্চ ২০২২ ০০:২০
ঢাকা: অপহরণের শিকার এক কলেজছাত্রীকে অপহরণের দুই দিন পর মানিকগঞ্জ সদর এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এসময় অপহরণে জড়িত অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তিন জনের মধ্যে মূল অভিযুক্তের নাম আবু জার গিফারী গাফফার। বাকি দু’জন সাব্বির হোসেন ও হাফিজুর রহমান তার সহযোগী।
সোমবার (৭ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান। এসময় তিনি বলেন, তাদের কাছ থেকে এক কৌটা অ্যাসিডসদৃশ পদার্থ ও তিনটি ধারালো অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব কমান্ডার বলেন, গত শনিবার (৫ মার্চ) বিকেলে ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী ও তার এক সহপাঠী প্রাইভেট শেষে রিকশায় করে বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় গাফফার সহযোগীদের নিয়ে রাস্তা থেকে মেয়েটিকে অপহরণ করেন। গাফফার আগে থেকেই কলেজছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করতেন। এ ঘটনায় কলেজছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।
গ্রেফতার তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, অপহরণের পর কলেজছাত্রীকে প্রথমে রাজবাড়ীতে গাফফার তার এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় নিয়ে যান। সেখান থেকে ঢাকা হয়ে চলে যান সিলেটে। সিলেট থেকে ফরিদপুর যাওয়ার পথে দুই সহযোগীসহ গাফফারকে গ্রেফতার করা হয়।
ঝিনাইদহে খোঁজ নিয়ে র্যাব জানিয়েছে, আবু জার গিফারী গাফফার ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা যুবলীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম সম্পাদক। তিনি কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে লেখাপড়া করেছেন। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, গাফফারের সঙ্গে ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর সঙ্গে কখনোই কথা হয়নি। তবে গাফফার ওই ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করেছেন। গাফফারের ভয়ে ওই ছাত্রীর পরিবার বাসাও পরিবর্তন করেছে। ছাত্রীর মা-বাবাকে বিভিন্ন সময় ভয় দেখিয়েছেন গাফফার। যখন গাফফার বুঝতে পারেন ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না, তখন অপহরণের পরিকল্পনা করেন। অপহরণের সময় ছাত্রীকে অ্যাসিড নিক্ষেপের ভয়ও দেখানো হয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, আবু জার গিফারী গাফফার এলাকায় প্রভাবশালী। ওই ছাত্রীর পরিবার ভয়ে কখনো অভিযোগ করেনি। এমনকি অপহরণের পর ছাত্রীর বাবাকে মামলা না করার জন্য হুমকি দিয়েছেন গাফফার। মামলা করার পর সেটি তুলে নিতে হুমকি দিয়েছেন। এগুলো এলাকাবাসী জানতেন। এমনকি ৭-৮ জন এলাকাবাসীর সামনে থেকেই ওই ছাত্রীর মুখ চেপে ধরে অপহরণ করা হয়েছে। তারা কোনো প্রতিবাদ করেননি। অথচ অপহরণকারীদের তারা চিনতেন। এ ধরনের অপরাধ দমনে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। সেখানে যারা ছিলেন, তাদের প্রতিবাদ করা উচিত ছিল এবং ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর