Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৮ মার্চ ২০২২ ২১:৩৯

ঢাকা: দেশে প্রকৃতপক্ষে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে যুবদল এ সমাবেশ আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সারাদেশে প্রকৃতপক্ষে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। মানুষ বলতে পারে না। ওই টিবিসির ন্যায্যমূল্যে ট্রাকের পেছনে গিয়ে দাঁড়ায় মুখোশ পরে। এরপরে সেখানে লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়, সেখানে ধাক্কাধাক্কি করে, মারামারি করে কোনো রকমে এক লিটার তেল অথবা একটু ডাল, চালের জন্যে।

তিনি বলেন, ‘বাণিজ্যমন্ত্রী যেদিন বললেন, জিনিসপত্রের দাম কমাও নইলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেদিনই পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেলো। এর অর্থ কী? অর্থ হচ্ছে এই সরকারের বাজারের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এর প্রধান কারণ হচ্ছে বাজারের সিন্ডিকেট। সমস্ত সিন্ডিকেটের প্রধান হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতারা। আজকে বাংলাদেশে যত চাঁদাবাজি, যত ঘুষ খাওয়া সব কিছুর মূলহোতা আওয়ামী লীগ। তারা সারাজীবন যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই তারা জনগণের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার চেষ্টা করেছে। ১৯৭২-৭৫ সাল একই অবস্থা ছিল এবং তাদের অযোগ্যতা, দুর্নীতির কারণে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, লাখ মানুষ না খেয়ে মারা গিয়েছিল।’

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গতকাল দুবাই গেছেন। দুবাই যাওয়ার আগে তিনি কিছু বক্তৃতা করেছেন। তার মধ্যে একটি জায়গায় তিনি বলেছেন, করোনাকালে এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জিনিসপত্রের দাম সব জায়গায় বেড়েছে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ কবে থেকে শুরু হলো? আর কবে থেকেই দেশের মানুষ চিৎকার করছে যে, তেলের দাম কমাও, চালের দাম কমাও, ডালের দাম কমাও, আমরা আর পারছি না।

বিজ্ঞাপন

‘আর করোনার দুই বছর ধরে যে, চুরি-ডাকাতি আপনারা করেছেন স্বাস্থ্যখাতে, করোনাকে কেন্দ্র করে প্রণোদনার দেওয়ার নামে সরকারি টাকা দিয়েছেন গরীবকে গরীব করার জন্য সেকথার জবাবটা দেন প্রধানমন্ত্রী। আজকে অর্থনীতির যারা বিশেষজ্ঞ তারা সবাই বলছেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সবাই বলেছেন যে, বাংলাদেশে এই বছরে গরীবদের সংখ্যা আগের চেয়ে দুই পারসেন্ট বেড়েছে’- বলেন মির্জা ফখরুল।

সরকার হটানো ছাড়া বিকল্প নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কলকাতাতে যদি ট্রাম ভাড়া চার পয়সা বাড়ে, তো কলকাতা বন্ধ হয়ে যায়, জিনিসপত্রের দাম বাড়লে কলকাতা বন্ধ হয়ে যায়। এরা (আওয়ামী লীগ সরকার) ১৪ বছর ধরে এতো নির্যাতন-নিপীড়ন-করছে যখন আমরা ঠিক সেইভাবে বন্ধ করতে পারছি না। কিন্তু বন্ধ করতে হবে আমাদেরকে। সমস্ত অন্যায়-নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ করতে হলে, মানুষকে বাঁচাতে হলে, দরিদ্র মানুষের দুই বেলা আহারের ব্যবস্থা করতে হলে এই সরকারকে হটানো ছাড়া কোনো বিকল্প নাই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার যদি আরও কিছুদিন থাকে তাহলে এই দেশের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। এরা বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে পরিকল্পিতভাবে, এরা প্রশাসনযন্ত্র আমলাতন্ত্রকে দলীয়করণ করেছে, শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধবংস করেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাদের দলীয় লোকজনকে নিয়োগ দিয়ে সেখানে দুর্নীতির আখড়া তৈরি করেছে। আজকে দুর্নীতি এমন এক পর্যায় গিয়ে পৌঁছেছে, যেখানে কোথাও আর দুর্নীতি বাকী নেই।’

‘এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে, সকলকে আজ ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাতে চাই, আসুন সমস্ত রাজনৈতিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভয়াবহ কর্তৃত্ববাদী সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি। আর সরকারকে বলতে চাই, আপনাদের দিন শেষ হয়ে গেছে। সুতরাং ভালোয় ভালোয় পদত্যাগ করুন, পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন’- বলেন মির্জা ফখরুল।

বিজ্ঞাপন

যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, নুরুল ইসলাম নয়ন ও মামুন হাসানের যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুবদলের মোরতাজুল করীম বাদরু, আবদুল খালেক হাওলাদার, আলী আকবর চুন্নু, গোলাম রাব্বানী, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, রুহুল আমিন আকিল, জাকির হোসেন সিদ্দিকী, কাজী আজিজুল হাকিম আরজু, জাকির হোসেন নান্নু, মজিবুর রহমান প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/একেএম

টপ নিউজ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর