Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিলুপ্তপ্রায় ‘বাটাগুর বাসকা’র প্রজনন হচ্ছে করমজলে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১০ মার্চ ২০২২ ০৮:৪৬

বাটাগুর বাসকার ডিম, ছবি: সারাবাংলা

বাগেরহাট: দেশের এক মাত্র বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্র সুন্দরবনের করমজলে ২০১৪ সালে ৮টি বাটাগুর বাসকা ও তাদের জন্ম দেওয়া ৯৪টি বাচ্চা দিয়ে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির কচ্ছপটির কৃত্রিম প্রজনন প্রক্রিয়া শুরু হয়। আর এ প্রজনন কেন্দ্র থেকেই বড় হওয়া বাটাগুর বাসকার বাচ্চা ২০১৭ সালে ২টি, ২০১৮ সালে ৫টি, ২০১৯ সালে ৫টি কচ্ছপ সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে অবমুক্ত করে বন বিভাগ। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ১০টি কচ্ছপ সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হবে।

সুন্দরবনের করমজল কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, ‘সর্বশেষ গত ৬ মার্চ সকালে বন্যপ্রাণি কেন্দ্রের কচ্ছপ লালনপালন কেন্দ্রের পুকুর পাড়ে প্রায় বিলুপ্ত প্রজাতির কচ্ছপ বাটাগুর বাসকা ৩৪টি ডিম দিয়েছে। বাচ্চা ফোটানোর জন্য ডিমগুলো ইনকিউবেশনে (বালুর মধ্যে) রাখা হয়েছে।’

৬০ থেকে ৬৫ দিন পরে এই ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় বিলুপ্ত প্রজাতির এই কচ্ছপ আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে লালনপালন করে আসছি। বংশ বাড়ানোর জন্য আমরা সার্বক্ষণিক নজরে রাখছি। এ বারের ডিমগুলো থেকে বাচ্চা ফুটানোর জন্য ইনকিউবেশনে রাখা হয়েছে। আশা করি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হবে। বর্তমানে আমাদের এই প্রজনন কেন্দ্রে ৪৩৬টি কচ্ছপ রয়েছে।’

২০১৭ সালে দুটি কচ্ছপের ৬৩টি টি ডিম থেকে ৫৭টি বাচ্চা হয়। ২০১৮ সালে দুটি কচ্ছপের ৪৬ ডিম থেকে ২১টি বাচ্চা পাওয়া যায়। ২০১৯ সালে একটি কচ্ছপের ৩২টি ডিম থেকে ৩২টি বাচ্চা পাওয়া যায়। ২০২০ সালে ১০ মে একটি কচ্ছপের ৩৫টি ডিম থেকে ৩৪টি বাচ্চা পাওয়া যায়। এসব বাচ্চা থেকে ২০১৭ সালে ২টি, ২০১৮ সালে ৫টি, ২০১৯ সালে ৫টি কচ্ছপ সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে অবমুক্ত করে বন বিভাগ।

উল্লেখ, ২০০০ সালের দিকে বন্যপ্রাণি গবেষকরা মনে করেন পৃথিবীতে আর বাটাগুর বাসকার কোনো অস্তিত্ব নেই। পরে ২০০৮ সালে গবেষকরা প্রকৃতিতে বাটাগুর বাসকা আছে কি না তা খুজতে শুরু করেন। খুঁজতে খুঁজতে নোয়াখালী ও বরিশালের বিভিন্ন জলাশয়ে ৮টি বাটাগুর বাসকা পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৪টি পুরুষ ও ৪টি স্ত্রী। প্রজননের জন্য গাজীপুরে নিয়ে যাওয়া হয় কচ্ছপগুলোকে।

বনবিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকেরা নিবিড়ভাবে লালনপালন ও প্রজননের চেষ্টা করে বাটাগুর বাসকাগুলোকে। তারপরও তেমন সাফল্য পাওয়া যায়নি। তবে, কয়েক বছরে গাজীপুরে প্রায় ৯৪টি বাচ্চা দিয়েছিল ৮টি মা কচ্ছপ। সেখানে ভালো সাড়া না পাওয়ায় ২০১৪ সালে মূল ৮টি বাটাগুর বাসকা ও তাদের জন্ম দেওয়া ৯৪টি বাচ্চাসহ করমজল কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়।

সারাবাংলা/এনএস

বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্র বাটাগুর বাসকা সুন্দরবন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর