যে রাজনীতি নারীর পক্ষে, সে রাজনীতি বেছে নিতে হবে: দীপু মনি
১০ মার্চ ২০২২ ১৭:১১
ঢাকা: যে রাজনীতি নারীর পক্ষে, মানুষের পক্ষে, মানবাধিকারের পক্ষে, সে রাজনীতি বেছে নিতে হবে। যে রাজনীতি নারীর অধিকারের স্বীকিৃতি দেয় না, তার কী দরকার?
জাতীয় নারী দিবস উপলক্ষে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত সভায় এমন মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নারী সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীল। রান্না করবে কে? নারী। সেলাই করবে কে? নারী। ঘর ধোয়ামোছা করবে কে? নারী। কিন্তু যখনই এর সঙ্গে অর্থপ্রাপ্তি যোগ হয়, তখন দর্জি পুরুষ, বাবুর্চি পরুষ এবং ক্লিনারও পরুষ। যে কাজ আর্থিক সংশ্লেষ ছাড়া করা হয়, সেটি নারীর কাজ। আর অর্থ যোগ হলেই তা পুরুষের। এই বিভাজন সমাজের তৈরি করা।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আমরা চাকরিতে অনেক জায়গায় এখন নারীদের উপস্থিতি দেখছি। বাহাত্তরের সংবিধানে নারীর সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আজ যারা নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করেন, সেখানেও ক্ষমতায়নে নারীর অবস্থান তৈরি হয়নি।
তিনি বলেন, এটি সত্য— আমাদের প্রধানমন্ত্রী, সংসদ উপনেতা, স্পিকার ও বিরোধী দলীয় নেতা নারী। অথচ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় নারীরা এখনো অনেক পিছিয়ে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এত বিশাল মন্ত্রণালয়, আমি মন্ত্রী নারী। মাঠ পর্যায়ে অনেক শিক্ষক আছেন নারী। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় নারী খুব কম।
১৯৯৭ সালের নারী নীতিমালা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ উল্লেখ করে ডা. দীপু মনি বলেন, ১৯৯৭ সালের নারী নীতির মৌলিক কতগুলো বিষয় ছিল। সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকারসহ বিভিন্ন মৌলিক বিষয় ছিল। কিন্তু ২০০৫ সালে রাতের অন্ধকারে সেই নারী নীতিকে ছিঁড়ে-খুঁড়ে একেবারে ধ্বংস করে দেওয়া হলো। কারণ তখন যে সরকার, সেই সরকারের মূল অংশে ছিল একটি মৌলবাদী দল। মূল দলটিও নারীবিদ্বেষী, তার যথেষ্ট প্রমাণও আছে।
তিনি আরও বলেন, নারী নীতিকে পাল্টে ফেলার পর যেটি হলো— আবার যখন ২০১১ সালে নারী নীতিটি করলাম। কিন্তু এতদিনে আমাদের রাজনীতির চেহারা এতখানি পাল্টে গিয়েছিল যে আমরা আর ১৯৯৭ সালের নীতিমালার মৌলিক জায়গায় ফিরে যেতে পারিনি। কিন্তু আমাদের ওই জয়গায় যেতে হবে।
নারীর অধিকার ও রাজনীতি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যে রাজনীতি মানুষের স্বীকিৃত দেয় না, মানুষের অধিকারের স্বীকিৃতি দেয় না, নারীর মানবাধিকারের স্বীকৃতি দেয় না— সেই রাজনীতির কী দরকার? যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে, নারী নির্যাতন করেছে, যারা সেই অপরাধীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়— নারীর অধিকার লঙ্ঘন করার সব কায়দা-কানুন তাদের মাধ্যমেই হবে। তাহলে নারী কেন সেই রাজনীতিকে সমর্থন দেবে? সমর্থন দেওয়া উচিত নয়।
‘যারা প্রগতির কথা ভাবেন তাদেরও সেই রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার কারণ নেই। নারীর অধিকার তো রাজনৈতিক বিষয়ও,’— মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
সারাবাংলা/টিএস/টিআর
নারী দিবস নারীর অধিকার নারীর রাজনীতি পিকেএসএফ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি