নিরাপত্তা চেয়ে মিঠামইন থানায় প্রাথমিক শিক্ষিকার জিডি
১০ মার্চ ২০২২ ১৮:৪৭
কিশোরগঞ্জ: নিরাপত্তা চেয়ে অতি সম্প্রতি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন হুমকির শিকার কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার ২নং বগাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোছাম্মদ মদিনা খাতুন (৪১)।
অভিযুক্ত নারীর নাম মোছা. মাহমুদা আক্তার মনি (৪৪)। তিনি উপজেলার গোপদিঘী ইউনিয়নের বগাদিয়া গ্রামের মো. নূরুল হক ভূঞার স্ত্রী।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, বিবাদী মোছা. মাহমুদা আক্তার মনি (৪৪) অত্যন্ত খারাপ এবং ঝগড়াটে প্রকৃতির লোক। তার বাড়ি বিদ্যালয়ের পাশে। তিনি বিভিন্ন সময় কারণে-অকারণে বিদ্যালয়ের ভেতর প্রবেশ করে ছাত্রছাত্রীদের সামনে বাদী মোছাম্মদ মদিনা খাতুনসহ প্রধান শিক্ষক ও সহকর্মী শিক্ষকদের উদ্দেশ্য করে কটূক্তি ও উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে থাকেন। সে জন্য মোছা. মাহমুদা আক্তার মনিকে প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক মোছাম্মদ মদিনা খাতুন প্রয়োজন ছাড়া পাঠদানের সময় বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে আসতে নিষেধ করেন। কিন্তু তাতে তাকে ফেরানো যায়নি বরং রাগে ক্ষিপ্ত হন।
জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, শিক্ষকরা বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিম্নগামিতায় সরকারের নির্দেশিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্বপ্লপরিসরে খুলে দেওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুই শিফটে বিদ্যালয়ে শ্রেণি পাঠদান চালিয়ে আসছিলেন। গত ১৫ নভেম্বর বরাবরের মতো সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে মধ্যাহ্ন বিরতির আগে বহিরাগত ওই নারী বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে ঢুকে বাদিনী মোছাম্মদ মদিনা খাতুনসহ প্রধান শিক্ষক ও সহকর্মী শিক্ষকদের লক্ষ্য করে উচ্চস্বরে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভিন্ন ধরনের অযাচিত কথাবার্তা বলতে থাকেন। এহেন অবস্থায় মোছা. মাহমুদা আক্তার মনিকে বিদ্যালয়ের আঙিনা ছেড়ে চলে যাওয়ার অনুরোধ করলে তিনি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এতে যে কোনো সময় শিক্ষকদের বিশেষ করে অভিযোগকারী মোছাম্মদ মদিনা খাতুন যেকোনো ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।
এ ছাড়া নিগ্রহের শিকার শিক্ষক মোছাম্মদ মদিনা খাতুন ‘বগাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিরাপদ পাঠদান উপযোগী পরিবেশ এবং শিক্ষকদের হেনস্তাহেতু মান-মর্যাদা ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে’ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে বিভাগীয় হস্তক্ষেপে প্রতিকার চেয়ে আবেদনও করেছেন।
এদিকে সংশ্লিষ্ট কার্যালয় জানায়, তারা অভিযোগ পেয়েছেন এবং খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগকারী মোছাম্মদ মদিনা খাতুন বলেন, ‘এই ন্যক্কারজনক ঘটনার পর বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির (এসএমসি) সভাপতি মো. আলী আজগর ভূঞার কাছে বিচার চাওয়া হলেও তিনি তাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।’
তিনি আরও বলেন, জিডি করার পর হুংকার আরও বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ফলে মনে ভয়ানক আতঙ্ক নিয়ে বিদ্যালয়ে শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম এগিয়ে নিতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মোছা. মাহমুদা আক্তার মনির বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিঠামইন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাকির রব্বানী, যার জিডি নং ৬৫৩।
তিনি বলেন, ‘অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। এই অভিযোগের বিষয়ে আদালতের অনুমতি চাইব। তারপর পরবর্তী পক্রিয়ায় যাব।’
সারাবাংলা/একে