Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিনিয়োগের সুযোগ লুফে নিন— আমিরাতের উদ্যোক্তাদের প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১০ মার্চ ২০২২ ২২:০০

ঢাকা: ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ ও আকর্ষণীয় সুযোগগুলো লুফে নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আসুন, বাংলাদেশকে আপনার ব্যবসার গন্তব্য বানান। আমি আপনাদের সবাইকে আশ্বস্ত করছি, বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের আকর্ষণীয় সুযোগ-সুবিধার স্থান।

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) সংযুক্ত আরব আমিরাতের চেম্বার্স অব কমার্স এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিজনেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করতে সমঝোতা স্মারক সই হয়। দুবাই প্রদর্শনী কেন্দ্রে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আবুধাবির সফরকালীন আবাসস্থল থেকে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বিনিয়োগকারীরা যেন বাংলাদেশে বিশ্বের সেরা গন্তব্য হিসেবে খুঁজে পান তার জন্য বাংলাদেশ উদ্যোক্তাদের নীতিগত ও অবকাঠামোগত সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত।

বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানগত সুবিধার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আছে দুর্দান্ত ভূ-কৌশলগত অবস্থান। সব প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পরিবহন রুটের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সংযোগ রয়েছে। এছাড়াও জনবহুল এবং ক্রমবর্ধমান দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়ার সংযোগস্থলে রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার এবং এ অঞ্চলের আশপাশের বাজারগুলোতে উন্মুক্ত প্রবেশ সুবিধা রয়েছে। এই সুবিধাগুলো বাংলাদেশকে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য এবং ভবিষ্যতের উৎপাদন ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কেন্দ্রে পরিণত করেছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রায় ১৭ কোটি মানুষের দেশ। এই মানুষগুলো তরুণ, উদ্যোমী, উচ্চাকাঙ্ক্ষী। আমাদের শ্রমশক্তি কঠোর পরিশ্রমী। এ শ্রমশক্তি সাশ্রয়ী এবং তারা দ্রুত শিখতে পারে। সারাদেশে রয়েছে উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধা। সেইসঙ্গে বাংলাদেশে সাড়ে ৬ লাখের বেশি পুরোপুরি দক্ষ ফ্রিলান্সার ডেভেলপারও রয়েছে।

বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভবনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কগুলো বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত। এছাড়া কৃষি খাতে উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ, উৎপাদনশীলতা এবং রেমিট্যান্স প্রবাহের কারণে অন্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন দ্রুত নগরায়ন ও শিল্পায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার-উদ্ভাবন-বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে জনগণের প্রযুক্তিগত কানেকটিভিটি বেড়েছে। আমাদের লক্ষ্য আমাদের উৎপাদনগুলোকে বিশ্ব বাজারের সঙ্গে আরও মসৃণভাবে সংযুক্ত করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের শীর্ষ তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী দেশগুলোর একটি। চামড়া, পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটজাত পণ্য, খাদ্য এবং সর্বোপরি তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদানেও বাংলাদেশ ভালো করছে।

বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি এখানে আপনাদের উষ্ণ আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, আসুন আমাদের স্বপ্ন এবং লক্ষ্যপূরণের যাত্রায় সঙ্গী হোন।

টানা তিন মেয়াদে সরকারপ্রধানের দায়িত্বে থাকা শেখ হাসিনা বলেন, এই করোনা মহামারিতেও বিশ্বের যে গুটিকয়েক অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে তাদের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। আমাদের স্বচ্ছ লক্ষ্য, বিচক্ষণ পরিকল্পনা, সুশাসন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, কঠোর পরিশ্রমি মানুষের অক্লান্ত প্রচেষ্টা এবং উদ্যোমী উদ্যোক্তাদের কারণে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের বিস্ময়।

বিজ্ঞাপন

সেন্টার পর ইকোনোমিক্স অ্যান্ড বিজনেস রিসার্সের (সিইবিআর) ধারণায় ২০৩৬ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৪তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে বলেও উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ‘উন্নয়ন মডেলে’র দৃঢ় ভিত্তি গড়ে তুলেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এর ওপর ভর করে আরও উন্নয়ন করা যায়। বাংলাদেশ ৪১৬ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিকে শিগগিরই বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিণত করার এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে।

দুবাই প্রান্তে উপস্থিত থেকে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বৈদেশিক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী থানি বিন আহমেদ আল জেইয়োদি, এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন, সংযুক্ত আরব আমিরাত চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ মোহামেদ আল মাজরোই।

পরে দুই দেশের মধ্যে একটি যৌথ বিজনেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করতে এফবিসিসিআই এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত চেম্বার্স অ্যান্ড কমার্সের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ মোহামেদ আল মাজরোই এতে সই করেন। অনুষ্ঠানে দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভবনা তুলে ধরে ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপরাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের আমন্ত্রণে গত সোমবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আবুধাবি পৌঁছান শেখ হাসিনা। সফর শেষে ১২ মার্চ দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

আমিরাত চেম্বার অব কমার্স এফবিসিসিআই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিনিয়োগের আহ্বান যৌথ বিজনেস কাউন্সিল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর