ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজের জন্যেও ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হবে
১০ মার্চ ২০২২ ২১:১৬
ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম চলছেন। ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজ দেওয়ার জন্য দেশে শিগগিরই করোনার বুস্টার ডোজের ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হবে। বুস্টার ডোজের সময় হয়েছে, কিন্তু বুস্টার ডোজ নেননি এমন সবাইকে এর আওতায় আনা হবে।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) দুপুরে জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত প্রায় ২২ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দিয়েছি। বিশ্বের ২০০ দেশের মধ্যে আমরা টিকাদানে আট নম্বরে এসেছি। অর্থাৎ ভ্যাকসিন প্রয়োগে আমরা সফল হয়েছি। এসবের সব কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তার গাইডলাইনে আমরা কাজ করেছি।
তিনি বলেন, আমরা পূর্বেও ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন করেছি। সর্বশেষ ক্যাম্পেইনে একদিনেই এক কোটিরও বেশি মানুষকে আমরা ভ্যাকসিন দিয়েছি। এখনো প্রথম ডোজসহ আমরা অন্যান্য ভ্যাকসিন দিয়ে যাচ্ছি। সফল ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমের কারণে দেশে সংক্রমণের হার দুই শতাংশে নেমে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে শিগগিরই করোনা প্রতিরোধে বুস্টার ডোজের ক্যাম্পেইন শুরু হবে। যারা বুস্টার ডোজ নেননি, তারা যেন অতি দ্রুত নিয়ে নেন, এটাই আমাদের উদ্দেশ্য। আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। প্রশাসনের কর্মীরাও আমাদের সহযোগিতা করছে।
করোনা প্রতিরোধে দেশের মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে সরকারের ৪০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিন কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা করোনাভাইরাস মোকাবিলা করতে পেরেছি। আমরা শুরুতেই পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন ক্রয় করেছি। উপহার হিসেবেও অনেক ভ্যাকসিন পেয়েছি। ভ্যাকসিন ক্রয়, সংরক্ষণ ও ব্যবস্থায় আমাদের খরচ ৪০ হাজার কোটি টাকা।
তিনি আরও বলেন, করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। সবমিলিয়ে অল্প সময়ে দেশে ২২ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দিয়ে করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ এখন অষ্টম স্থানে রয়েছে। আর এত বড় কার্যক্রমে তেমন কোনও অনিয়ম বা ত্রুটি দেখা যায়নি। করোনায় বাংলাদেশ রোল মডেল হিসেবে সারাবিশ্বে অবস্থান করে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর গাইডলাইনে আমরা কাজ করেছি। করোনায় এখনও মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।
জাহিদ মালেক বলেন, এখন স্বাস্থ্য সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। একই সঙ্গে অনেক নতুন ইনস্টিটিউট গঠন করা হয়েছে। এতে বিদেশে না গিয়েই রোগীরা সর্বাধুনিক চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এক ধরনের বিনামূল্যে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। এজন্য আইনও করা আছে, ডোনার পেতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। বর্তমান আইনে নানা সুযোগ রয়েছে। তবে আমাদের সমাজে সচেতনতার অভাব রয়েছে। কিন্তু পরিবারের আপত্তিতে তা সম্ভব হয় না।
এজন্য সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, কিডনি চিকিৎসায় বেশকিছু নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আট বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ১৫০ বেডের কিডনি হাসপাতালের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ কমবে, রোগীদের ঢাকায় আসতে হবে না। এতে তাদের খরচ ও ভোগান্তি হ্রাস পাবে।
কিডনি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কিডনি হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবিরসহ অন্যান্যরা।
সারাবাংলা/এসবি/আইই
অসংক্রামক ব্যাধি কিডনি জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল জাহিদ মালেক ভ্যাকসিন সংক্রামক ব্যাধি স্বাস্থ্যমন্ত্রী