Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আরেকটিবার আয় রে সখা, প্রাণের মাঝে আয়’

রাহাতুল ইসলাম রাফি, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
১২ মার্চ ২০২২ ১৮:১৮

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের সুইমিংপুলের পাশে মধ্যবয়স্ক সাবেক এক শিক্ষার্থী ফোনে জোরে কথা বলছিলেন। হয়তো তার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। তার কথাগুলো ছিল এ রকম— ‘তুই সুইমিং পুলের ওইদিকে চলে আয়। ওই যে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি যেদিকে আছে, ওই দিকে। আমি ওখানে আছি।’

বোঝাই গেল বিশাল কর্মযজ্ঞের এক কোণে দাঁড়িয়ে কোনো এক বন্ধুর অপেক্ষায় আছেন তিনি। অপেক্ষা করছেন হয়তো হলের রুমমেট বা কোনো এক বন্ধুর জন্য। অথবা একসঙ্গে ক্লাসরুম শেয়ার করা কারোর জন্য। হয়তো দীর্ঘ সময় পর আজ আবারও দেখা হবে তাদের। চোখে মুখে যেন রবীন্দ্রনাথের সেই গান— ‘আয়, আরেকটিবার আয় রে সখা, প্রাণের মাঝে আয়…’

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১২ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাবেক শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানস্থল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে গিয়ে বন্ধুতার এমন সব চিত্রের দেখা মিলছে আজ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ, মুজিব শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত এই মিলনমেলাকে কেন্দ্র করে ৯ হাজার ৩৩৭ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছেন।

এদিকে, মিলনমেলাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বহির্বিভাগ থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সীমিত করা হয়েছে জনসাধারণের চলাচলও। বর্ণিল সাজে সেজেছে পুরো কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ। সাজিয়ে তোলা হয়েছে মাঠের দুই ফটক। মাঠের ভেতরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর আদলে প্রতীকী স্থাপনা বানিয়েছেন আয়োজকেরা।

বিজ্ঞাপন

অপরাজেয় বাংলা, সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, স্মৃতি চিরন্তনসহ বিভিন্ন স্থাপনার প্রতীকী স্থাপনা বানানো হয়েছে। এগুলোকে কেন্দ্র করে ছবি তুলছেন অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী। কখনো একা কিংবা দুজন, কখনো বা পনেরো-বিশ জনের গ্রুপ হয়ে ছবি তুলতে দেখা গেছে তাদের।

আবার কেউ কেউ মূল অনুষ্ঠানের মনোযোগী শ্রোতা হয়ে অনুষ্ঠানস্থলে বসে আছেন। কেউ কেউ অন্য এক পাশে জড়ো হয়ে আড্ডায় মেতে উঠছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনের নানান গল্পের ভিড়ে স্বর্ণালী সময় তাদের চোখে-মুখে উঁকি দিচ্ছে।

১৯৫৮ সালে দর্শন বিভাগে ভর্তি হওয়া নাজনীন আহমেদ কথা বলেন সারাবাংলার সাথে। তার সহপাঠীদের অনেকেই ইতোমধ্যে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন, অনেকেই রোগাক্রান্ত। অনুষ্ঠানে একজন সহপাঠীরও দেখা পাননি তিনি। এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘আমার অনেক ইচ্ছে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ দেখে যাব। আল্লাহ আমাকে দেখিয়েছেন। এই মিলনমেলায়ও উপস্থিত হতে পেরেছি। আমার বন্ধু-বান্ধবদের অনেকেই মারা গেছেন। এখন যারা আছেন, তাদের অনেকেই রোগাক্রান্ত। এখন পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানে বন্ধুদের কারও দেখা পাইনি।’

কথা হয় স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি কলা অনুষদের শিক্ষার্থী ছিলাম। ১৯৭৫ সালের ব্যাচ। স্বাধীনতার পর আমরাই প্রথম ব্যাচ ছিলাম। সেই হিসেবে ঐতিহাসিক একটি ব্যাচ ছিলাম আমরা। এই ধরনের মিলন মেলায় আমরা বন্ধুরা মিলেমিশে আসি। আমাদের সেই বন্ধুত্বের সার্কেলটা এখনো রয়ে গেছে।’

এর আগে, সকাল দশটার দিকে ‘বাংলাদেশের পথযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই’ স্লোগানে বর্ণিল আয়োজনে শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আ্যলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের শতবর্ষের মিলনমেলা অনুষ্ঠান। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ প্রাঙ্গনে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সোয়া ১০টার দিকে মিলনমেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণতম শিক্ষার্থী মো. মতিউল ইসলাম ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রসাশন) ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক এ কে এম মাকসুদ কামাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামানই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদসহ ঢাবি শিক্ষক সমিতির সদস্যরা।

সারাবাংলা/আরআইআর/পিটিএম

টপ নিউজ ঢা‌বি শিক্ষার্থী পুনর্মিলনী

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে তরুণের মৃত্যু
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:১০

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর