ক্রমশ নেমে যাচ্ছে পানির স্তর, ইরি-বোরো চাষে বিপাকে কৃষক
১৩ মার্চ ২০২২ ০৮:১৫
গাইবান্ধা: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আশংকাজনক হারে পানির স্তর নিচে নামতে থাকায় ইরি-বোরো চাষে সেচ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। অনেকেই ৭/৮ ফুট গর্ত বা কুয়া করে তার মধ্যে সেচ মেশিন বসিয়ে সেচ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরেও ঠিক মতো পানি না ওঠায় বিপাকে কৃষকেরা।
স্থানীয়রা জানান, গাইবান্ধার গেবিন্দগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম এলাকা তুলনামূলক অনেকটা উঁচু এবং লাল মাটি। যে কারণে খরা মৌসুমে এই এলাকার সেচ মেশিনগুলিতে প্রতি বছরই পানি কম পাওয়া যায়। কিন্ত বর্তমান মৌসুমে পানির স্তর আশংকাজনক হারে আরও নিচে নেমে যাওয়ায় অনেক সেচ মেশিনে পানি ওঠছে না।
সাপমারা ইউনিনের চক রহিমাপুর, রামপুরা, সাহেবগঞ্জ, মেরী, মাদারপুর, কাটাবাড়ী ইউনিয়নের পলুপাড়া, কলোনী, ভেলামারী, কৌচাসহ বেশ কিছু এলাকার সেচ মেশিনে পানি একেবারেই মিলছে না। যে কারণে কৃষকরা কোথাও ৮ ফুট, কোথায় ১০ ফুট কূপ খনন করে তার মধ্যে সেচ পাম্প বসিয়ে পানি তুলছেন। কিন্তু সেখানেও কয়েকদিন পর পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ইরি-বোরো ধান যেহেতু সেচনির্ভর, সে কারণে ভূগর্ভস্থ পানি না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।
সাহেবগঞ্জ গ্রামের কৃষক ধলু মোহন্ত বলেন, ‘গত বছর ৫ ফুট গভীর গর্তে শ্যালো মেশিন বসিয়ে পানি তুলে ছিলাম। এবছর আরও ৩ ফুট গভীর গর্ত করে পানি তুলতে হচ্ছে।’
মেরী গ্রামের ইব্রাহীম মিয়া বলেন, ‘আমার সেচ মেশিন ১০ ফুট গভীরে বসিয়ে সেচ দিচ্ছি। এবার নতুন করে ৪ ফুট গভীরে মেশিন বসাতে হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী বছরগুলোতে পানি সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করবে।’
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রেজা ই মাহমুদ বলেন, ‘গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বরেন্দ্র এলাকার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিরসনের জন্য বিএডিসি সেচ প্রকল্প ও বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন এলাকা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।’
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন এলাকার (বিএমডিএ) গাইবান্ধা জোনালের সহকারী প্রকৌশলী মো. তারিক আজিজ বলেন, ‘আমাদের প্রকল্প এলাকায় সমস্যা হচ্ছে না। তবে পার্শ্ববর্তী কিছু এলাকায় পানির সমস্যার কথা শুনেছি। গর্ত করে সেচ মেশিন বসিয়ে পানি তোলা হচ্ছে। এসব এলাকায় সাব-মার্সিবল পাম্প বসিয়ে সেচ মেশিন ব্যবহার করা যেতে পারে ‘ তবে এসব এলাকায় প্রতিবছরই পানির স্তর ওঠানামা করে বলেও জানান তিনি।
সারাবাংলা/এমও