এমএফএস-এর ১০ বছর: আর্থিক অন্তর্ভুক্তি সম্প্রসারণের প্রত্যয়
১৩ মার্চ ২০২২ ২২:১৫
কোটি মানুষের দৈনন্দিন আর্থিক লেনদেন আরও সহজ, নিরাপদ, তাৎক্ষণিক করা এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি আরও সম্প্রসারণ করার প্রত্যয় নিয়ে ঢাকায় শেষ হলো এমএফএস’র ১০ বছর পূর্তি উদযাপনের সমাপনী উৎসব। ১১ কোটির বেশি গ্রাহকের এমএফএস খাতের ১০ বছর পূর্তি উদযাপিত হচ্ছে ‘হাতের মুঠোয় আর্থিক সেবা’ স্লোগানে।
শনিবার (১২ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, গেস্ট অব অনার ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
এমএফএসের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দেওয়া রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বাণী অনুষ্ঠানে পড়ে শোনানো হয়। এছাড়া পরিকল্পনামন্ত্রী ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী ভিডিওবার্তায় শুভেচ্ছা জানান।
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আবুল কাশেম মো. শিরিন, বিকাশের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার কামাল কাদীর এক দশকে কোটি মানুষের জীবনের অংশ হয়ে ওঠা এমএফএস সেবার যাত্রা পথের চিত্র এবং ভবিষ্যতের এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
বিকাশ, রকেট, এমক্যাশ, উপায়, ট্যাপ, মাই ক্যাশ, টেলিক্যাশ, ট্যাপ এন পে, এফএসআইবিএল, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, ওকে ওয়ালেট, ইসলামিক ওয়ালেট ও নগদের পৃষ্ঠপোষকতায় দেশজুড়ে মেলা, আলোচনা অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশে এমএফএস খাতের ১০ বছর পূর্তি উদযাপিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এমএফএস সেবার কল্যাণে এখন আমরা যেখানেই থাকি, যখন দরকার তখনই কয়েকটি বাটন চেপে ডিজিটাল মানি পৌঁছে দিতে পারি প্রিয়জনের কিংবা যার প্রয়োজন সেই মানুষটির কাছে। কেনাকাটা, বিল পেমেন্ট থেকে শুরু করে প্রায় সব সেবাই এখন এসে গেছে গ্রামের কিংবা শহরের, শিক্ষিত কিংবা শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত, ধনী কিংবা দরিদ্র— সব সাধারণ মানুষের আঙুলের ডগায়। এটিই মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের গত ১০ বছরের অর্জন।
বিশেষ অতিথি সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার সঙ্গে মোবাইল ফোন ও অ্যাপনির্ভর ব্যবস্থা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রকে বিস্তৃত করেছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসহ অন্যান্য সেবা মানুষ এখন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিতে পারছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ধরনের ভাতা এখন এমএফএসের কল্যাণে সরাসরি উপকারভোগীদের মোবাইল ফোনে পৌঁছে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, আমি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকাকে সাধুবাদ জানাই, যারা কেবল নানা ধরনের গ্রাহকবান্ধব সেবাই চালু করেনি, বরং মানুষের মধ্যে আর্থিক লেনদেনের জ্ঞান বা ডিজিটাল লিটারেসি বাড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এমএফএস খাত সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান ও স্টেকহোল্ডারদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বাংলাদেশ আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে এতখানি এগিয়ে গেছে।
সমাপনী অনুষ্ঠানের দুই পর্বের আয়োজনে প্রথম পর্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, এমএফএস প্রতিষ্ঠান, অর্থনীতিবিদ, গবেষকসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে প্যানেল ডিসকাশন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম পর্বের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল। এই পর্বে এমএফএস নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার পরিপ্রেক্ষণ থেকে আলোচনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক মো. মেজবাউল হক এবং এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিপ্রেক্ষণ থেকে আলোচনা করেন ইসলামী ব্যাংকের এমডি ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা।
এর আগে, গত ৩ মার্চ শুরু হয়ে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, বগুড়া ও রাজশাহীতে বিভিন্ন আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় ‘এমএফএস মেলা’। সবশেষ ১০ মার্চ ঢাকায় শিল্পকলা একাডেমিতে মেলার সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়। সচেতনতামূলক পুতুল নাচ, গম্ভীরা, মঞ্চ নাটকের জমজমাট আয়োজনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, এমএফএস সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, গ্রাহক, এজেন্ট, মার্চেন্টসহ সাধারণ মানুষেরও উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
সারাবাংলা/টিআর