মানবতাবিরোধী অপরাধীর বাড়ি হবে পরিত্যক্ত সম্পত্তি
১৪ মার্চ ২০২২ ১৫:৪৬
ঢাকা: আদালতের রায়ে বাজেয়াপ্ত মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বাড়ি পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হবে— এমন বিধান রেখে ‘পরিত্যক্ত সম্পত্তির বাড়ি (সম্পূরক বিধানাবলি) আইন, ২০২২’-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। একইসঙ্গে নতুন আইন অনুযায়ী পরিত্যক্ত সম্পত্তির বাড়িবণ্টন কিংবা অন্য যেকোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিত।
সোমবার (১৪ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রান্তে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে বলেন, ১৯৮৫ সালে এ সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশ ছিল। যারা ১৯৭১ সালে দেশত্যাগ করে চলে গেছেন, তাদের সম্পত্তি পরিত্যক্ত হিসেবে বিবেচিত হতো। বিধি-বিধান করে সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। পরে ১৯৮৫ সালে একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। সামরিক শাসনামলের অধ্যাদেশ ছিল সেটি। সে কারণে হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী নতুন আইন আনতে হচ্ছে।
সচিব বলেন, এর আগে যে অধ্যাদেশ ছিল, তাদের দুয়েকটি ছোটখাটো সংশোধনী আনা হয়েছে। আইনের মৌলিক বিষয়গুলোর মধ্যে পরিত্যক্ত সম্পত্তি বা বাড়িগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে— একটি তিন শতাংশ আয়তনের মধ্যে জমিসহ বাড়ি, আরেকটি তিন শতাংশের বেশি জমির বাড়ি। তিন শতাংশের বাড়িগুলোকে সেইল লিস্ট বলা হতো। যেগুলো তিন শতাংশের বেশি জমির, সেগুলো ছিল রিটেইল লিস্টে। সেইল লিস্টে বাড়িগুলো যুদ্ধাহত ও শহিদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে অগ্রাধিকার অনুযায়ী ১৯৭২ সালের দাম অনুযায়ী দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, রিটেইল লিস্টের বাড়িগুলো পূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতায়। এসব জমিতে অনেক অফিস আছে। এগুলো সরকারি বাড়ি হিসেবে পূর্ত মন্ত্রণালয় বিভিন্ন দফতরকে লিজ বা ভাড়া দিয়েছে।
নতুন আইনে কিছু নতুন বিষয় যুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধীর মামলায় যদি কেউ দণ্ডিত হতো, কোর্ট যদি তার জমিজমা-সম্পত্তি সিজ করে নেন, তাহলে সেটিও পরিত্যক্ত বাড়ির মধ্যে পড়বে, যেটি আগে ছিল না। আদালতে প্রমাণিত কিংবা আদালত ঘোষিত কোনো ব্যক্তির বাড়ি বা সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে সংযুক্ত বা বাজেয়াপ্ত করলে সেটিও পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে বলেও জানান তিনি।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এখন বাড়িগুলোর যে মূল্য হয়েছে, মন্ত্রী-সচিবসহ বিভিন্ন বড় বড় কর্মকর্তারা গুলশান-বনানীতে যেসব বাড়িতে থাকেন, এগুলো ৯৯ শতাংশই পরিত্যক্ত সম্পত্তি। এসব বাড়ির মূল্য অনেক বেড়ে গেছে। এককটি বাড়ির দাম কয়েশ কোটি টাকাও হবে। সেজন্য আইনে একটি সংশোধনী আনা হয়েছে। আগে সরকার (সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়) এই বাড়িগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারত। এখন এসব বাড়ির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন সরকারপ্রধান।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর