পার্বত্য ৩ জেলার অবৈধ ইট ভাটা অপসারণের নির্দেশ
১৪ মার্চ ২০২২ ১৬:১৭
ঢাকা: পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার ১৩০টি অবৈধ ইট ভাটা আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে ভেঙে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আগামী তিন দিনের মধ্যে ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৪ ও ১৯ ধারা অনুসরণ করে অবৈধ ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৪ মার্চ) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
আদেশের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, পার্বত্য তিন জেলায় অবৈধ ইট ভাটা অপসারণের জন্য জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষ থেকে আবেদন করেছিলাম। আদালত সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে সাত দিনের মধ্যে সেগুলো অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী জেলা প্রশাসন অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করেনি। দুই-চারটি বন্ধ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন। কিন্তু তারা আবার এগুলো চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, এসব নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে এনেছি। পাশাপাশি আদালত আরেকটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন, মোট কতটি অবৈধ ইটভাটা আছে এই তিন জেলায় তার তালিকা দাখিলের জন্য। সেই তালিকা আজ জেলা প্রশাসন থেকে আদালতে দাখিল করা হয়েছে। যেখানে তিন পার্বত্য জেলা— খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙ্গামাটিতে ১৩০টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
আইনজীবী আরও জানান, আজ আদালত আমাদের আবেদনের শুনানি নিয়ে আগামী তিন দিনের মধ্যে ইট ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৪ ও ১৯ ধারা অনুসরণ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
ইট ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৪ ও ১৯ ধারায় বলা হয়েছে, যারা এ রকম অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা করবেন, তাদের বিরুদ্ধে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হওয়ার বিধান রয়েছে। এ ছাড়া তিন জেলার ১৩০টি অবৈধ ইটভাটা ছয় সপ্তাহের মধ্যে ভেঙে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।
এর আগে, পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা— খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত সব অবৈধ ইটভাটা সাত দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং এসব অবৈধ ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত।
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় বিভিন্ন ইটভাটা লাইসেন্স ছাড়া পরিচালিত হচ্ছে এবং পাহাড় কেটে মাটি ইটভাটার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভাটার জ্বালানি হিসেবে বনের গাছ ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। এসব প্রতিবেদন যুক্ত করে জনস্বার্থে এইচআরপিবি’র পক্ষে আইনজীবী মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, একলাছ উদ্দিন ভূইয়া ও রিপন বাড়ৈ হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর