প্রতিবেশীর ঘরে কিশোরীর লাশ, ধর্ষণের পর হত্যা
১৪ মার্চ ২০২২ ২০:৩৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে প্রতিবেশীর বাসা থেকে এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাকে শ্বাসরোধে খুন করে লাশ খাটের নিচে রেখে পালিয়ে যায় প্রতিবেশী ব্যক্তি। খুনের আগে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলে ধারণা পুলিশের।
রোববার (১৩ মার্চ) রাতে নগরীর হালিশহর থানার আলী শাহ মাজার সংলগ্ন এলাকার একটি বাসা থেকে কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ১৩ বছর বয়সী কিশোরী স্থানীয় একটি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়দো। তার মা বাসার অদূরে একটি পোশাক কারখানার কর্মী। বাবা রিকশাচালক। দুই ভাই, এক বোনের মধ্যে কিশোরী সবার বড়। আরেক ভাই বুদ্ধি প্রতিবন্ধী।
নগর পুলিশের ডবলমুরিং জোনের সহকারী কমিশনার আরিফ হোসেন সারাবাংলাকে জানান, রোববার সকাল ৮টার দিকে কিশোরীর মা কারখানায় চলে যান। বাবাও রিকশা নিয়ে বেরিয়ে যান। দুপুরে মা বাসায় ভাত খেতে এসে মেয়েকে না পেয়ে স্কুলের দুই সহপাঠীর কাছে বিষয়টি জানতে চান। তারা জানায়, সে প্রাইভেট পড়ার পর স্কুলে বই রেখে এসেছে, কিন্তু পরে আর স্কুলে যায়নি। এরপর থেকে তাকে খোঁজাখুজি শুরু করেন তারা। কিন্তু কোথাও মেয়েটির খোঁজ পাননি।
তিনি জানান, এক পর্যায়ে রাতে দেখতে পান, পাশের বাসায় ফ্যান চলছে, লাইটও জ্বলছে। কিন্তু বাইরে তালা মারা। তখন তাদের সন্দেহ হয়। বাড়ির মালিককে বিষয়টি জানালে তিনি তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখেন, খাটের নিচে মেয়েটির লাশ পড়ে আছে। পরে পুলিশকে খবর দেয় তারা।
আরিফ হোসেন বলেন, ‘পাশের বাসায় থাকেন আলমগীর নামে এক ব্যক্তি ও তার স্ত্রী মৌসুমি। আলমগীর গত তিন মাস ধরে বেকার। সারাক্ষণ বাসায় থাকেন। মৌসুমি ওই কিশোরীর মায়ের সঙ্গে একই কারখানায় কাজ করেন। লাশ উদ্ধারের আগে থেকেই আলমগীর ও মৌসুমি পলাতক আছেন। প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে জানতে পেরেছি, রোববার সন্ধ্যার দিকে আলগীর পোশাক কারখানার সামনে থেকে স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
কেন ও কীভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মেয়েটিকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত নিশ্চিত তথ্যপ্রমাণ ও আলামত আমরা পেয়েছি। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে কামড়ের দাগ আছে। ধারণা করা হচ্ছে, আলমগীর ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।’
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মেয়েটি সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত প্রাইভেট কোচিংয়ে পড়তো। এরপর স্কুলে বই রেখে বাসায় এসে ভাত খেয়ে আবার স্কুলে গিয়ে বেলা ১২টা থেকে ক্লাশ করতো।
পুলিশের ধারণা, রোববার কোচিং থেকে বাসায় আসার পর আলমগীর তাকে ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পলাতক আলমগীর ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফ হোসেন।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম