শুরু হচ্ছে ‘গানে মুজিব অলিম্পিয়াড’
১৫ মার্চ ২০২২ ১৮:৪১
ঢাকা: দেশে প্রথমবারের মতো ‘সংস্কৃতি’ নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে শুরু হচ্ছে ‘গানে মুজিব অলিম্পিয়াড’। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে রচিত গানের এই প্রতিযোগিতার নিবন্ধন শুরু হবে আগামী ১৭ মার্চ থেকে, যা চলবে ১৭ মে পর্যন্ত। এরপর শুরু হবে প্রতিযোগিতার মূল কার্যক্রম।
আয়োজকরা বলছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের প্রতি অবিচল আস্থা, শ্রদ্ধা ও আদর্শ নতুন প্রজন্মের অন্তরে প্রোথিত করাই এই অলিম্পিয়াডের মূল উদ্দেশ্য। এই প্রতিযোগতার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত নতুন নতুন গানের প্রসারও ঘটবে।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘সংস্কৃতি’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংগঠনটির সভাপতি ড. মকবুল হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সহসভাপতি কানিজ আকলিমা সুলতানা, সাধারণ সম্পাদক কেয়া হায়দার, নির্বাহী সদস্য নাজমুল আহসান ও খন্দকার আবুল কালামসহ অন্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে ড. মকবুল হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বাঙালির দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, দেশ গঠনে তার নেতৃত্ব ও পঁচাত্তরে নৃশংসভাবে তাকে হত্যার প্রতিবাদে বহু গান রচিত হয়েছে। এসব গানে তার প্রতি আস্থা, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, স্বাধীনতা সংগ্রামে তার নেতৃত্বের কথা, ঘাতকের হাতে তার মৃত্যুর পর জাতির শোকের কথা সুরে ও বাণীতে অনুরণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, এগুলো গান হিসেবে মানুষের মনে যেমন দাগ কাটে তেমনি ইতিহাসের ছবিও আঁকে। মহান এই নেতার কৃতিত্ব, বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামে তার অবদানের কথা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে স্মরণ করা ও বহন করার জন্য এসব গানের চর্চা ও প্রচার একান্ত প্রয়োজন। এ বিষয়টি সামনে রেখে জাতির পিতাকে নিয়ে রচিত গানের জাতীয় পর্যায়ের এ প্রতিযোগিতার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতিযোগিতা হবে দুইটি বয়স শ্রেণিতে— ১২ থেকে ১৮ ও ১৮ বছরের বেশি। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ— এই আটটি বিভাগে প্রতিযোগিতা হবে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে সেরা মান, উচ্চ মান ও ভালো মান— এই তিন পর্যায়ে পুরস্কৃত করা হবে। বিভাগীয় পর্যায়ে নির্বাচিতরা জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন। জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদেরও জাতীয় পর্যায়ের সেরা, উচ্চ ও ভালো মান— এই তিন পর্যায়ে পুরস্কৃত করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৭ মার্চ থেকে প্রতিযোগিতার নিবন্ধন শুরু হবে। সারাদেশ থেকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য গান পাঠাতে হবে। নিবন্ধনের জন্য মোবাইলে গান ভিডিও রেকর্ড করে সংস্কৃতি’র ইনবক্সে অথবা [email protected] ইমেইল ঠিকানায় পাঠাতে হবে। মোবাইলে গান রেকর্ড করার সময় গান গাওয়ার আগে নিজের নাম, জেলা, কোন গ্রুপের (ক. ১২-১৮ বৎসর পর্যন্ত ও খ. ১৮ বৎসরের বেশি) প্রতিযোগী, গানের শিরোনাম, গীতিকার ও সুরকারের নাম উল্লেখ করতে হবে। গানের সঙ্গে নাম, ঠিকানা, বয়স, ছবি ও মোবাইল নম্বর আলাদা করে পাঠাতে হবে।
সংস্কৃতি’র ইনবক্সে বা ইমেইলে পাওয়া গান বিভাগীয় পর্যায়ে বিন্যাস করে প্রাথমিক নির্বাচন করা হবে। বিভাগীয় পর্যায়ে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের নিয়ে হবে বিভাগীয় প্রতিযোগিতা। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের বয়স প্রমাণের জন্য প্রতিযোগিতার সময় স্কুল সার্টিফিকেট/ইউপি চেয়ারম্যানের সার্টিফিকেট/এনআইডি প্রদর্শন করতে হবে। বিভাগীয় পর্যায়ে বিজয়ী ৪৮ জনকে নিয়ে ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা হবে।
জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা শেষে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিদের উপস্থিতিতে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে এবং পুরস্কার বিতরণ করা হবে। পুরস্কার বিতরণ শেষে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত গানের অনুষ্ঠান হবে। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা এবং জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীরা অংশ নেবেন।
এক প্রশ্নের উত্তর ড. মকবুল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু নিয়ে রচিত গানের সঠিক সংখ্যা এখনো আমাদের জানা নেই। সংস্কৃতি থেকে আমরা একটি বই বের করেছি, যেখানে ১১টি গান স্থান পেয়েছে। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত আরও বেশ কিছু গান সংগ্রহ করা যাবে।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে কোনো স্পন্সর ছাড়াই সদস্যদের অর্থায়নে এই অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অনেকেই আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন। চূড়ান্ত পর্যায়ে হয়তো কোনো স্পন্সর নেওয়া হতে পারে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর