আওয়ামী লীগ নেতার বিরূদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
১৫ মার্চ ২০২২ ১৯:৩৫
খাগড়াছড়ি: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা দুর্নীতির মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিনের আদালত এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। দুদক’র পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সুপাল চাকমা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে সুপাল চাকমা জানান, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সম্পত্তি দখল, আত্মসাৎ এবং সরকারি অর্থ ক্ষতির অভিযোগে দণ্ড বিধি’র ৪০৯/৪২০ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় জাহেদুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল দুদক। ২০১৯ সালের ২ এপ্রিল দুদক চট্টগ্রাম-২ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী উপপরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
দুদক’র ওই মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য থাকাকালীন সময়ে জাহেদুল আলম ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিলেন। খাগড়াছড়ি বাজার শাহী জামে মসজিদ সংলগ্ন জেলা পরিষদের মালিকানাধীন মিনি সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলার আবাসিক হোটেল জোরপূর্বক দখলে নিয়েছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মিনি সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় নির্মিত আবাসিক হোটেল ইজারা দেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল জেলা পরিষদ। এর প্রেক্ষিতে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমাও দিয়েছিল। এর মধ্যে অমিত চাকমার মালিকানাধীন মেসার্স কংলী অ্যান্ড কোম্পানিকে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে নির্বাচন করে হোটেলটি পাঁচ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু জেলা পরিষদের সদস্য জাহেদুল আলম তাতে বাধা দেয়। ফলে চুক্তি সম্পাদনের পর এক বছরের অগ্রিম ভাড়া দিয়েও ইজারা পাওয়া হোটেলটি দখলে নিতে পারেননি অমিত চাকমা।
পরে ২০১৫ সালের ২৯ মার্চ থেকে হোটেল ও আল-আমিন অ্যান্ড কফি হাউজ নামে সেখানে ব্যবসা পরিচালনা শুরু করেন জাহেদুল আলম। হোটেলের চতুর্থ তলায় রান্না ঘর নির্মাণ করা হলে সেটিও জাহেদুল জোরপূর্বক দখল করে নেন। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী হোটেলটি অবৈধভাবে দখলের বিষয়ে জাহেদুল আলমের কাছে ব্যাখ্যা তলব করলেও জবাব দেননি তিনি। এর পরিস্থিতিতে ২০১৬ সালের ১৭ মার্চ জাহেদুলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইজারাদারকে হোটেলটি বরাদ্দ দেওয়া হলেও দখলে যেতে না পারায় জেলা পরিষদের হোটেলটির ভাড়া বাবদ কোনো অর্থ জমা হয়নি। এতে পরিষদের ১৯ লাখ ৮২ হাজার ৪২৫ টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধন ও আত্মসাৎ করা হয়েছে মর্মে মামলায় অভিযোগ আনা হয় জাহেদুল আলমের বিরুদ্ধে।
এদিকে সম্প্রতি এই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। আর মঙ্গলবার অভিযোগপত্র গ্রহণের সময় আদালতে হাজির ছিলেন না জাহেদুল আলম। ফলে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
সারাবাংলা/এনএস