রাঙ্গামাটিতে ছাত্রলীগ নেতা খুন
১৭ মার্চ ২০২২ ১৩:০০
রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি জেলা শহরের হাসপাতাল এলাকায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে জয় ত্রিপুরা (২৭) নামের এক ছাত্রলীগ নেতা খুন হয়েছেন।
বুধবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, রাতে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এক তরুণকে পড়ে থাকতে দেখে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখনো জীবিত ছিলেন তিনি। পরে হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে জয় ত্রিপুরা।
নিহত ছাত্রলীগ নেতা জয় ত্রিপুরা রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা ছাত্রলীগের উপপ্রচার সম্পাদক এবং জেলা শহরের দেবাশীষনগর এলাকার প্রয়াত খোকনমনি ত্রিপুরার ছেলে।
রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জমিরউদ্দিন হঠাৎ অসুস্থ হলে তাকে রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জমির ভাইকে চট্টগ্রামে রেফার করলে তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। অন্যদের সঙ্গে জয়ও তাকে দেখতে হাসপাতালে যায়। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে সড়কে তার মোটরসাইকেল আটকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাকে ছুরিকাঘাত করেছে বলে জেনেছি। পরে হাসপাতালে মারা যায় সে। আমরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল আলম রাশেদ বলেন, জয় যে এলাকায় থাকত, সেখানে সে পাহাড়িদের মধ্যে একাই সক্রিয় ছাত্রলীগ নেতা ছিল। তাকে প্রায়ই এ কারণে আঞ্চলিক একটি দলের কর্মীরা ভয়ভীতি দেখাত বলে সে আমাদের জানিয়েছে বিভিন্ন সময়। এ ঘটনায় তারা কিংবা যেই জড়িত হোক না কেন, আমরা তদন্তসাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের বিচার চাই।
নিহতের মামা ঝিনুক ত্রিপুরা বলেন, জয় রাতে জমিরউদ্দিনকে দেখার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিল। কে জানত নেতাকে দেখতে গিয়ে নিজেই লাশ হয়ে ফিরবে ঘরে। এই ঘটনার সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানিয়েছেন ঝিনুক ত্রিপুরা।
ঘটনার সময় হাসপাতালে থাকা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামাল উদ্দিন বলেন, আমরা জমির ভাইকে নিয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য বের হয়ে বাসা থেকে কিছু কাগজপত্র আনার জন্য হাসপাতালের গেটের কাছেই অ্যাম্বুলেন্সে অপেক্ষা করছিলাম। তখনই হঠাৎ কয়েকজনকে হৈ চৈ করতে দেখি। তারা কাউকে মারধর করছিল বলে মনে হচ্ছিল। যেহেতু আমরা রোগী নিয়ে টেনশনে ছিলাম, তাই ওই দিকে মনোযোগ দিতে পারিনি। পরে দেখি একটা ছেলে হাসপাতালের মেইন গেইটের কাছে কাঁতরাচ্ছে। আমি তাৎক্ষণিক ওসি কে ফোন করে বিষয়টি জানাই।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, খবর পেয়েই রাতে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। তার পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ঠিক কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে, প্রাথমিকভাবে কেউই সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছে না। তবে আমরা তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের অবশ্যই খুঁজে বের করব।
সারাবাংলা/টিআর