বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন ২১ মার্চ, কলাপাড়া যাবেন প্রধানমন্ত্রী
১৮ মার্চ ২০২২ ১৮:১৮
পটুয়াখালী: আগামী ২১ মার্চ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দেশের বৃহৎ ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে দু’টি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদনের নির্মাণ কাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন। এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলে দেশের বিদ্যুতের ঘাটতি কিছুটা কমবে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা।
বিসিপিসিএল সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ নর্থওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরশনের (সিএমসি) মধ্যে ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালীতে কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্মাণ কাজ শুরুর পর থেকে নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরও ২০২০ সালের ১৫ মে প্রথম ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে দিতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)।
পরে ওই বছরের ৮ ডিসেম্বর আল্ট্রা সুপার প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্বিতীয় ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। কিন্তু গোপালগঞ্জ সাবস্টেশনের ধারন ক্ষমতা কম থাকায় এবং গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকার আমিনবাজার পর্যন্ত সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ না হওয়ায় দ্বিতীয় ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এখন পর্যন্ত সরবারহ করতে পারছেনা এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।
তবে এ বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে পুরো ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে দিতে সক্ষম হবে এ পাওয়ার প্ল্যান্টটি। তাই আগামী ২১ মার্চ এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সশরীরে উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর আগমণকে কেন্দ্র করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সাজানো হচ্ছে নতুন সাজে। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে প্যান্ডেল সাজানোর কাজ। ১ হাজার একর জমির উপর নির্মিত পরিবেশবান্ধব এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২.৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার। প্রতিদিন এই কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজন হবে ১৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা।
ধানখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি টিনু মৃধা জানান, দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা কোন দিন ভোলার নয়। তার আগমনের খবরে আমাদের এলাকার মানুষ আনন্দিত। কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আশিক তালুকদার জানান, দক্ষিনাঞ্চলের উন্নয়নের রুপকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আমরা প্রতিনিয়ত আনন্দ মিছিল করছি। আমরা উচ্ছ্বসিত।
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক শাহ গোলাম মওলা জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমণ উপলক্ষে আমরা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তর নতুন করে সাজাচ্ছি। ইতিমধ্যে প্যান্ডেল তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র দক্ষিণাঞ্চলে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবারহে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করবে।
পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমণ উপলক্ষে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই নিরাপত্তার মধ্যে কোভিড প্রটোকলও রয়েছে। সব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ চলছে। ইতিমধ্যে সাদা পোশাকের নিরাপত্তা বাহিনীসহ চার স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা বাহিনী মাঠে কাজ করছে।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ‘শুধু পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নয়, ওইদিন দেশের শতভাগ বিদ্যুতায়নেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগমণকে ঘিরে ইতিমধ্যে আমরা সব প্রস্তুতি শেষ করেছি।’
সারাবাংলা/এমও
কলাপাড়া পটুয়াখালী পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিসিপিসিএল