অনুকূল আবহাওয়ায় আগাম ভুট্টা চাষে বাম্পার ফলন
১৯ মার্চ ২০২২ ০৯:০৩
কুয়াকাটা: কুয়াকাটাসহ দেশের দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলে দিনদিন বিস্তৃত হচ্ছে ভুট্টার চাষ। অনুকূল আবহাওয়ায় আগাম চাষে মিলেছে বাম্পার ফলন। চাষিরাও পাচ্ছেন ন্যায্যমূল্য। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ বাড়ানো গেলে এবং প্রশিক্ষণ পেলে প্রতি মৌসুমে এ খাত থেকেই আয় হতে পারে কোটি কোটি টাকা। তবে এক্ষেত্রে কৃষি অফিসের সহয়তা না পাওয়ার কথা জানালেন কৃষকরা। অন্যদিকে, কৃষি অফিস বলছে সহয়তা দেওয়া হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপকূলের কৃষকরা দফায় দফায় ভুট্টার চাষ করছেন। কারো ক্ষেত ভরা ভুট্টা গাছের ফলন কাটার উপযুক্ত হয়েছে। ৫/৬ ফুট উঁচু গাছে বাতাসে দুলছে। কারও কারও ক্ষেতে কেবল মাত্র ফল এসেছে। চাষিরা পানি সেচ দিচ্ছেন। কারও ক্ষেতের গাছ ২/৩ ফুট উঁচু হয়েছে। কৃষক গাছের গোড়ায় মাটি টেনে দিয়ে পরিচর্যা করছেন। কেউ ফলন কেটে বিক্রয় করেছেন। এখন ভুট্টা গাছের কাণ্ড জ্বালানির জন্য রোদে শুকাচ্ছেন।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কম পরিশ্রমে ভালো ফলন হয়, উচ্চ বাজার চাহিদা, বেশ লাভজনক হওয়ায় উপকূলে দিনদিন বাড়ছে হলুদ মৌসুমী ভুট্টা চাষ। স্বল্পখরচে অধিক লাভের ফলে আগাম ভুট্টা চাষে কৃষকদেরও আগ্রহ বাড়ছে। চলতি মৌসুমে আগাম চাষে মিলেছে বাম্পার ফলন। মৌসুমের দেড় মাস আগে বাজারে আসায় চাষিরাও পেয়েছেন উচ্চ মূল্য। কিন্তু পানির সংকটসহ বৃষ্টি না থাকায় অনেক এলাকায় শুকিয়ে মরে যাচ্ছে গাছ। ঝরে যাচ্ছে ফল। ফলে কাঙ্ক্ষিত লাভ না পাওয়াসহ ক্ষতির শংকায় রয়েছেন অনেক কৃষক।
এই অঞ্চলে প্রতি শতক জমিতে ২ মন করে ভুট্টা উৎপাদিত হয়। যা উৎপাদনের খরচের চেয়ে দ্বিগুণ লাভ হয়। শুধু তাই নয় ভুট্টার কাণ্ড জ্বালানি, গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে পাতা ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ভুট্টার আটা, মাছ-মুরগির খাবারসহ নানা তালিকায় রয়েছে। বর্তমান ভুট্টা কৃষি বিপ্লব ঘটাতে ও কৃষকের অর্থনৈতিক চাহিদা মেটাতে অর্থকরী ফসলের তালিকায় রয়েছে। সাধারণত ইরি-বোর চাষ অনুপযোগী জমিতে ভুট্টার চাষ করা হচ্ছে।
বর্তমানে উন্নত জাতের উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করছেন কৃষকরা। কুয়াকাটাসংলগ্ন লতাচাপলী ইউনিয়নের মম্বিপাড়া গ্রামের আব্দুল শামছু, আলমগীর হোসেন, মুসুল্লীয়াবাদ গ্রামের মাহতাব মুসুল্লী, খলিলুর রহমান, মিশ্রিপাড়া গ্রামের আ. লতিফদের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, ভুট্টা চাষে অল্প পরিশ্রমে, স্বল্প খরচে বেশি ফলন পাওয়া যায়। বাজারেও বেশ চাহিদা রয়েছে। আর আগাম ফল আসলে ভালো দাম পাওয়া যায়। তাই তারা ভুট্টা চাষ করছেন।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ আর এম সাইফুল্লাহ বলেন, ‘পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ভুট্টা চাষের জন্য ১ হাজার ২০০ কৃষককে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কলাপাড়া উপজেলার জমি ভুট্টা চাষের জন্য উপযোগী, এ বছর ১২০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। আগাম চাষাবাদের জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করা হয়েছে।’
সারাবাংলা/এমও