Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নারীকে খুনের পর সিগারেটের আগুনে পোড়ানো হয় লাশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০ মার্চ ২০২২ ১৪:৫০

চট্টগ্রাম ব্যুরো : লৌমহর্ষক একটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে র‌্যাব। মাথায় উপর্যুপরি ইট দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয় এক নারীকে। লাশের পাশে বসে সিগারেট খায় অভিযুক্ত যুবক। জ্বলন্ত সিগারেটের উচ্ছ্বিস্ট অংশ ফেলে নারীর শরীরে। আগুন ধরে যায় পোশাকে। লাশটি প্রায় পুড়ে বিকৃত হয়ে যায়। লাশ সেখানে রেখেই অভিযুক্ত যুবক রাঙামাটি থেকে চলে যায় নেত্রকোণা।

গত ১১ মার্চ রাতে রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলায় বিএফআইডিসি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত টয়লেটে ওই নারীকে খুন করা হয়। পরদিন বিকেলে টয়লেটের ভেতর থেকে নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। খুন হওয়া নারীর পরিবার কিংবা পুলিশ কারও সন্দেহের তালিকায় ছিল না ওই যুবক। নারীর মোবাইলে কলের সূত্র ধরে র‌্যাব পেয়ে যায় ‘খুনির’ সন্ধান।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় নেত্রকোণা জেলার মদন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে র‌্যাবের চট্টগ্রাম জোনের একটি টিম। যুবককে জিজ্ঞাসাবাদে লৌমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বেরিয়ে আসে বলে জানান র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।

নিহত হাছিনা বেগম সুমি (২৮) রাঙামাটি জেলা সদরের দোভাষী বাজার এলাকায় মায়ের সঙ্গে থাকতেন। আর অভিযুক্ত মাহিবুর কামাল (২৩) রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার মুরগির টিলা এলাকার মনির ভাণ্ডারির ছেলে।

র‌্যাব-৭ এর হাটহাজারি ক্যাম্প কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, খুনের শিকার সুমির সঙ্গে তার স্বামীর একবছর আগে ছাড়াছাড়ি হয়। হাছিনা এলাকায় মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত। মাহিবুর ইয়াবা আসক্ত। ইয়াবা কেনাবেচার সূত্রে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। একবছর ধরে তারা ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করে।

বিজ্ঞাপন

’১৮ মার্চ মাহিবুরের অন্য এক নারীর সঙ্গে বিয়ের কথা ছিল। ১১ মার্চ সেটা জানতে পেরে সুমি তার সঙ্গে দেখা করতে যায়। স্কুলের পরিত্যক্ত টয়লেটে দু’জন এ বিষয়ে কথা বলার সময় তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে মাহিবুর তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করলে সুমি লুটিয়ে পড়ে। এরপর আরও ১৫ থেকে ২০ বার তার মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর লাশ পাশে রেখে ঠাণ্ডা মাথায় একটি সিগারেট খায় মাহিবুর। পরে সেই সিগারেটের জ্বলন্ত ভগ্নাংশ সুমির পোশাকের ওপর ফেললে আগুন ধরে যায়। আগুনের সুমির শরীরের প্রায় অর্ধেক এবং মুখমণ্ডল বিকৃত হয়ে যায়। মাহিবুর পুরো ঘটনা একেবারে সিনেমার মতো করে আমাদের সামনে বর্ণনা করেছে।’

র‌্যাব কর্মকর্তা মাহফুজুর আরও জানান, লাশ উদ্ধারের পর সুমির মা তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছিলেন। তবে সেই মামলায় মাহিবুরের নাম ছিল না। ছায়া তদন্তে নেমে র‌্যাব সুমির মোবাইলে তাদের দু’জনের ছবি পায়। এরপর কললিস্ট বের করলে দেখা যায়, ১১ মার্চ দুপুর থেকে মাহিবুর ও সুমি একাধিকবার কথা বলেছে। কল রেকর্ডে দু’জনের কথোপকথনও পায় র‌্যাব। এরপর তার অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়।

সারাবাংলা/আরডি/এএম

টপ নিউজ র‍্যাব

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর