ইসির সংলাপে আমন্ত্রণ পেলেন সুশীল সমাজের ৩৯ জন
২০ মার্চ ২০২২ ১৫:০৯
ঢাকা: আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে এবার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃতাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বেলা ১১টায় এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনগুলো কীভাবে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করা যায়, সে বিষয়ে সংলাপে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে মতামত শুনবো।
তিনি জানান, ইতোমধ্যেই সংলাপে আমন্ত্রণ জানিয়ে ইসি সচিবালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে বুদ্ধিজীবী, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, সাংবাদিক সঙ্গেও সংলাপে বসার পরিকল্পনা রয়েছেন কমিশনের।
ইসির সংলাপে আমন্ত্রণ পাওয়া ৩৯ জন হলেন— সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, বেগম রাশেদা কে চৌধুরী, ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, এম হাফিজ উদ্দিন খান, আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, মির্জা আজিজুল ইসলাম, বেগম রোকেয়া এ রহমান। সিপিডি‘র সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্রাচারর্য, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি শাহদীন মালিক, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত, টিআইবি‘র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ওয়ালি উর রহমান, ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এমএম আকাশ, নিজেরা করি কো-অর্ডনেটর খুশী কবির, সেন্টার ফর আরবান স্টাডজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, বাংলাদেশ ইনডিজিনিয়াস পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, সাবেক রাষ্ট্রদৃত এএফএম গোলাম হোসেন, অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান, সাবেক সচিব আব্দুর লতিফ মন্ডল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, প্রেসিডেন্ট গভনের্ন্স এন্ড রাইট সেন্টারের ড. জহুরুল আলম, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক বেগম শাহীন আনাম।
সংলাপে আমন্ত্রণ জানানোর তালিকায় আরও রয়েছেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রফেসর আমেনা মহসিন, অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন, অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক ড. এসএম শামীম রেজা, অধ্যাপক ড. শেখ হাফিজুর রহমান, সিপিডি‘র সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক রওনক জাহান, ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান, লিডারশিপ স্টাডিজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. সিনহা এম এ সাঈদ এবং লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ।
ইসি সূত্র জানায়, কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন সংলাপ শুরু করলেও দায়িত্ব নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত কমিশনের আনুষ্ঠানিক কোনো সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। কমিশন সভা না করে কিভাবে নতুন কমিশন সংলাপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে। তবে নির্বাচন কমিশনাররা কমিশন সভা না করলেও নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সমাজের বিভিন্ন প্রতিনিধির সঙ্গে সংলাপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এর আগে ২০১৭ সালে কেএম নুরুল হুদা কমিশনও দায়িত্ব নেয়ার পর সমাজের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সংলাপে বসেছিলেন। ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসার মধ্য দিয়ে ওই সংলাপ শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে নুরুল হুদা কমিশন ৪০টি রাজনৈতিক দল, নারী নেতৃত্ব, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিল। নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সিইসিসহ চার কমিশনার নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছে সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল।নির্বাচন কমিশনের অন্য কমিশনার হলেন- সাবেক জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান, সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর এবং আনিছুর রহমান।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ইসির বাকি চার কমিশনার শপথ নেন। পরদিন ২৮ ফেব্রুয়ারি নতুন কমিশন ইসিতে যোগদান করেন। যোগদানের পর গত ১৩ মার্চ প্রথম শিক্ষক সমাজের ৩০ জনকে সংলাপে বসার আমন্ত্রণ জানালেও প্রথমদিনের সংলাপে মাত্র ১৩ জন উপস্থিত হন। এই অবস্থায় আগামী ২২ মার্চ দ্বিতীয় ধাপে ৩৯ জন শিক্ষক প্রতিনিধির সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছে নতুন ইসি।
সারাবাংলা/জিএস/এএম