‘আত্মসমর্পণের প্রশ্নই আসে না’
২১ মার্চ ২০২২ ১০:২১
সোমবার (২১ মার্চ) রাশিয়ার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে ইউক্রেনের মারিউপোলের প্রশাসনকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছিল রাশিয়া। কিন্তু, ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী পত্রপাঠ তা নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, আত্মসমর্পণের প্রশ্নই আসে না; শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনের মানুষ লড়াই চালিয়ে যাবেন। খবর ডয়চে ভেলে।
এর আগে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, মারিউপোলে বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হচ্ছে। শহরের যা পরিস্থিতি, তাতে সেখানে আর এক মুহূর্তও কারও পক্ষে বাস করা সম্ভব নয়। ইউক্রেন রাজি হলে রাশিয়া কূটনৈতিক করিডোর খুলে দেবে। কিন্তু, ইউক্রেন তা মানতে রাজি হয়নি। তারা জানিয়েছে, কোনোভাবেই রাশিয়ার আহ্বানে সায় দেবে না তারা। লড়াই জারি থাকবে।
এরই মধ্যে ইউক্রেনের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রোববার মারিউপোলের একটি আর্ট স্কুলে হামলা চালিয়েছে রুশ সেনাবাহিনী। স্কুলটিতে বোমা মারা হয়েছে। প্রায় ৪০০ মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে স্থানীয় প্রশাসন দাবি করেছে। স্কুলটিতে আদৌ কেউ বেঁচে আছেন কি না, এখনো পর্যন্ত তা জানা যায়নি। ঘটনাস্থলের কাছে রাশিয়া লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
রাশিয়ার কর্নেল জেনারেল মিখাইল মিজিনটসেভ বলেছেন, ‘মারিউপোলে বহু সাধারণ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সেখানকার মানুষ আত্মসমর্পণ করুন। তারা অস্ত্র নামিয়ে রাখুন।’ পাশাপাশি, লড়াইয়ের মধ্যে তিন হাজার ৯৮৫ জনকে মারিউপোল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
রাশিয়া অবশ্য পাল্টা অভিযোগ এনেছে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে। তাদের বক্তব্য, জোর করে মারিউপোলের মানুষকে রাশিয়ায় পাঠানো হচ্ছে। সোমবার কিয়েভের প্রশাসন মারিউপোলে ৫০টি বাস পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে। তাতে করে কিছু সাধারণ মানুষকে অন্যত্র সরানোর কথা ভাবা হয়েছে। তবে ইউক্রেন অস্ত্র সমর্পণ না করলে রাশিয়া আক্রমণ থামাবে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
এই মুহূর্তে মারিউপোলে প্রায় চার লাখ ইউক্রেনীয় রয়েছেন। এছাড়াও আছে বিপুল পরিমাণ রুশ সেনা। মারিউপোলের এই লড়াইয়ের মধ্যেই সেখানে বাস করছিলেন গ্রিসের কনসাল জেনারেল মানোলিস আন্দ্রৌলাকিস। রোববার তিনি দেশে ফিরেছেন। এথেন্সে নেমে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, মারিউপোলের অবস্থা গোয়েরনিকার মতো। গ্রিসে কার্যত হিরোর মর্যাদা পেয়েছেন এই কূটনীতিবিদ।
তিনি জানিয়েছেন, প্রায় সমস্ত গ্রিক নাগরিককে উদ্ধার করে তারপরে তিনি ফিরেছেন। তার বক্তব্য, ‘হিরো হলেন মারিউপোলের সাধারণ মানুষ। সব শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও যারা মাটি কামড়ে পড়ে আছেন। আবার স্ক্র্যাচ থেকে সবকিছু তৈরি করতেও তারা প্রস্তুত।’
সারাবাংলা/একেএম