Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হালদায় অভিযান: চোরাশিকারিদের জাল ধ্বংস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ মার্চ ২০২২ ১৮:১০

চট্টগ্রাম ব্যুরো: মিঠা পানির মাছের প্রজননক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদীতে অভিযান চালিয়েছে নৌ পুলিশ। অভিযানে ‘মা মাছ’ হিসেবে পরিচিত রুই জাতীয় বড় মাছ ধরার জন্য নদীতে পুঁতে রাখা চোরাশিকারিদের প্রায় দশ হাজার মিটার জাল উদ্ধার করে ধ্বংস করেছে পুলিশ। এছাড়া বালু পরিবহনে নিয়োজিত কয়েকটি বাল্কহেড আটক করে সতর্ক করা হয়েছে।

সোমবার (২১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নগরীর কালুরঘাট থেকে উত্তরে কর্ণফুলী ও হালদা নদীর মোহনায় রাউজান-বোয়ালখালী সীমান্তে এ অভিযান চালায় নৌ পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

নৌ পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কীর্তিমান চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, ‘হালদা নদী বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। এটি স্পর্শকাতর সংরক্ষিত অঞ্চল। এখানে যে কোনো ধরনের জাল বসিয়ে বা অন্য উপায়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ। নদীতে ইঞ্জিনচালিত বোট চলাচল, বালি উত্তোলনও সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। কিন্তু আমরা তাৎক্ষণিক অভিযানে গিয়ে দেখলাম, নদীতে প্রায় দশ হাজার মিটার লম্বা সূক্ষ্ম সূতার জাল বসানো হয়েছে। এসব জালে বড় মাছ আটকা পড়লে আর বের হতে পারে না। পূর্ণিমার কারণে নদীর পানি কিছুটা ঘোলাটে হয়ে আছে। এই সুযোগে প্রজনন সক্ষম মা মাছ ধরার জন্য এসব জাল বসানো হয়েছে।’

নৌ পুলিশের দল অভিযান চালিয়ে জাল উদ্ধার করে ধ্বংসের পাশাপাশি কয়েকটি বাল্কহেড আটক করে। পুলিশ কর্মকর্তা জানান, হালদা নদীর মোহনায় সরকারিভাবে চলমান ড্রেজিং কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাল্কহেডগুলো বালি পরিবহন করছিল। সরকারি কাজ হওয়ায় সেগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের রাতে ইঞ্জিনচালিত নৌযান চালানোর বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গত ১৩ মার্চ আরও এক দফায় হালদা নদীতে অভিযান চালিয়ে নৌ পুলিশ জাল বসানোর জন্য স্থাপন করা শতাধিক বাঁশের ঘেরা কেটে ধ্বংস করে।

পাবর্ত্য জেলা খাগড়াছড়ি থেকে প্রবাহিত হয়ে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে এসে কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে মিলিত হওয়া হালদা নদীর দৈর্ঘ্য ১০৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৩৪ মিটার। এটি পৃথিবীর একমাত্র জোয়ার-ভাটার নদী যেখানে রুই জাতীয় মাছ ডিম ছাড়ে এবং নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। প্রতিবছর এপ্রিলের শেষ অথবা মে মাসে অমাবস্যা বা পূর্ণিমার তিথিতে ভারী বজ্রসহ বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢল নামলে এবং নদীর তাপমাত্রা ও লবণাক্ততা অনুকূলে থাকলে রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালাবাউশ জাতীয় মা মাছ ডিম ছাড়ে। স্থানীয় মৎস্যজীবীরা সেই ডিম সংগ্রহ করে রেণু ফুটিয়ে পোনা উৎপাদন করে। ডিম সংগ্রহ নিয়ে প্রতিবছর হালদা পাড়ে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়।

তবে শিল্প-কারখানার বর্জ্য, বালু উত্তোলনকারী ও চোরা শিকারিদের উৎপাতে দখল-দূষণে হালদা নদীর বিপন্ন দশার খবর বারবার আসে গণমাধ্যমে।

সারাবাংলা/আরডি/এসএসএ

চোরাশিকারিদের জাল ধ্বংস

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর