কবি নজরুল কলেজে অনিয়মের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
২১ মার্চ ২০২২ ২০:১৯
পরিবহন ফি নিয়েও পরিবহন চালু না করা, ছাত্রাবাস সংস্কারে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া, অবকাঠামোর কোনো উন্নয়ন না হওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন।
সোমবার (২১ মার্চ) কলেজের মূল ফটকে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের ছয় দাবি তুলে নানা স্লোগান দিয়ে মানববন্ধন করেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি ছয়টি হলো— ৯ কোটি টাকার বাস সার্ভিস নিশ্চিত করা, শহিদ শামসুল আলম হল সংস্কার করা, প্রতিটি ভবনে ছাত্রীদের কমনরুম, পরিত্যক্ত ডাফরিন হল চালু, ক্লাস ও ওয়াশরুম ডিজিটালাইজেশন, কলেজ ক্যান্টিন পুনরায় চালু করা এবং কলেজের অবকাঠামোর উন্নয়ন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মাহমুদ খান বলেন, বিগত ১০ বছরে আমাদের পরিবহন খাতে প্রায় ৯ কোটি টাকা জমা হওয়ার কথা। অথচ আমাদের বাস নেই। এসব টাকা কোথায় যায়? আমাদের ছাত্রাবাস সংস্কারে কলেজ প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই। মেয়েদের জন্য নেই কোনো আলাদা ওয়াশরুমের ব্যবস্থা। ক্যান্টিন চালু হলেও তা বন্ধ। কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার কলেজে নানা উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করলেও এই অধ্যক্ষ আসার পর তা বন্ধ হয়ে গেছে।
আরেক শিক্ষার্থী রাফি জানান, আমাদের অ্যাকাউন্টিং ডিপার্টমেন্টে ১৫০০ শিক্ষার্থী শিক্ষা সফর ফি দেয় ৭৫ হাজার টাকা করে। দুই বছরে প্রায় দেড় লাখ টাকা। অথচ আমরা শিক্ষা সফরে যেতে চাইলে তারা আমাদের টাকা দিতে চায় না। হিসাব চাইলে তারা অন্য কথা বলে। আমাদের জন্য তারা বরাদ্দ দেয় ২০০ টাকা। বাকি টাকার হিসাব কোথায়?
কলেজের ওয়েবসাইটের তথ্য উদ্ধৃত করে শিক্ষার্থীরা বলেন, ১৭ হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পরিবহন ফি ৪০০ টাকা করে বছরে ৬৮ লাখ টাকা, ছাত্র সংসদ ফি ২৫ টাকা করে বছরে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, রেঞ্জার ফি ১০ টাকা করে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, রেড ক্রিসেন্ট ২০ টাকা করে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা আদায় করে কলেজ প্রশাসন। অথচ কলেজে নেই কোনো পরিবহন, নেই রেড ক্রিসেন্ট, নেই ছাত্রসংসদ। রেঞ্জার ইউনিট তো চালুই হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তর আগে শিক্ষার্থী ছিল প্রায় ৩৩ হাজার। এক যুগেরও বেশি সময় কলেজে ছাত্র সংসদ নেই। সবশেষ ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছিল ২০০৮ সালে। ২০১৯ সালে ভাড়ায় দু’টি বিআরটিসি বাস চালু হলেও ১০ মাস পর তা বন্ধ হয়ে যায়। রেঞ্জার ইউনিট তো কলেজে নেই। রেড ক্রিসেন্টের কার্যক্রমও বন্ধ।
কলেজ বিএনসিসি’র এক সদস্য জানান, আমাদের কলেজে রেঞ্জার নেই। তবে রেড ক্রিসেন্ট একবার চালু করার জন্য কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আকবর হোসাইনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি কাগজে-কলমে দায়িত্ব নিলেও কাজ এগোয়নি। ক’দিন পরেই রেড ক্রিসেন্টের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
এসব বিষয়ে জানতে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমেনা বেগমের কাছে গেলে তিনি সাংবাদিকদের রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। আবার প্রশ্ন করলে তিনি দারোয়ানকে সাংবাদিকদের বের করে দিতে বলেন। পালটা প্রশ্ন করলে তিনি চেয়ার থেকে উঠে ভেতরের অন্য রুমে চলে যান।
সারাবাংলা/এনএসএম/টিআর
অনিয়মের অভিযোগ কবি নজরুল কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন