Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বাগানেই নিষিদ্ধ পপি ফুলের চাষ!

মাহী ইলাহি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২২ মার্চ ২০২২ ১০:১০

রাজশাহী: লাল রঙের ফুল। দেখতে চমৎকার। মন জুড়িয়ে দেওয়ার মতো। তবে দেখতে নয়নাভিরাম হলেও আদতে এটি পপি ফুল, যে ফুলের চাষ বাংলাদেশের আইনে নিষিদ্ধ। কারণ এই ফুলের রস থেকেই তৈরি হয় আফিম, হেরোইন ও মরফিনের মতো ভয়ংকর সব মাদক। অথচ সেই ফুলেরই শত শত গাছের চাষ কি না রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) বাগানে!

আরডিএ’র ফুল বাগানে গিয়ে দেখা গেল শত শত পপি ফুলের গাছ। কোনো গাছ ছেয়ে আছে লাল রঙের নজরকাড়া সব ফুলে। কোনো কোনো গাছে ফুলের পাপড়ি ঝরে ধরে রয়েছে ফল। পাকা ফলের শুকনো কিছু গাছ কাটা অবস্থাতেও দেখা গেল বাগানে। বাগান ছাড়াও আরডিএ ভবনের পাশে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্যও দেখা গেল এই পপি ফুলের সারি সারি গাছ।

উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের মাটি পপি ফুল চাষের জন্য খুবই উপযোগী। অক্টোবরের দিকে এই গাছের চারা রোপণ করা হয়। দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে গাছে ফুল ধরতে শুরু করে। সুন্দর এই ফুল থেকে ওষুধ তৈরির নানা উপাদান পাওয়া যায়। তবে ওষুধের জন্য যতটা না, তার চেয়েও বেশি এই গাছের রস ব্যবহার করা হয় মাদক তৈরির জন্য।

পপি গাছের কাঁচা ফলের খোসা ব্লেড দিয়ে কেটে বের করা হয় রস। সেই রস রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় আফিম। ভারত ও আফগানিস্তানে এই রস থেকে মরণনেশা হেরোইনও তৈরি করা হয়। আর এ কারণেই দেশে পপি ফুলের চাষ নিষিদ্ধ।

সোমবার (২১ মার্চ) আরডিএ’র অফিসে গিয়ে মালী কামরুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। তাই কোথা থেকে এই ফুলের গাছ সংগ্রহ করা হয়েছে, তা জানা যায়নি। এ বিষয়ে জানতে আরডিএ’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হায়াত মো. রহমাতুল্লাহ’র দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি পপি ফুলের গাছ চিনি না। হয়তো ভুল করে এই গাছ লাগানো হয়েছে।’

এ সময় তিনি দুই কর্মচারীকে ডেকে তাৎক্ষণিক বাগান থেকে পপি ফুলের গাছগুলো ধ্বংস করার জন্য নির্দেশ দেন। দুই কর্মচারী বাইরে থেকে ঘুরে এসে জানান, মালী কামরুল ইসলামকে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওই দুই কর্মচারীকে বলেন, ‘আমি কিচ্ছু জানি না। বিকেলে অফিস থেকে বের হওয়ার সময় যেন এসব গাছ না দেখি।’

এরপর আরডিএ কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাগানে গিয়ে গাছগুলো ধ্বংস করতে শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘এগুলো ভুল করেই লাগানো হয়েছিল। লাল লাল সুন্দর ফুল দেখেই হয়তো লাগানো হয়েছিল। এখনই সব তুলে ফেলব।’

জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের রাজশাহী উপঅঞ্চলের উপপরিচালক মোহাম্মদ লুৎফর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘পপি গাছ দুই ধরনের হয়। এর একটি থেকে মাদক হয়। তবে বাংলাদেশের আইনে সব ধরনের পপি ফুলই নিষিদ্ধ। তাও না বুঝে ভুল করে কেউ কেউ সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য বাগানে এই ফুলগাছ লাগিয়ে থাকে। এটি ঠিক নয়।’

লুৎফর রহমান আরও বলেন, ‘বগুড়ার দিকে কিছু নার্সারিতে পপির চারা পাওয়া যায়। কেউ যেন এগুলোর চারা উৎপাদন কিংবা বিক্রি না করে, তার জন্য আমরা প্রচার চালাই।’

আরডিএ’র বাগানে পপি ফুলের উপস্থিতি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘তারা নিজেরাই বাগান ভেঙে দিচ্ছে, এটি ভালো। নইলে আমরা গিয়ে ভেঙে দিয়ে আসতাম।’

সারাবাংলা/টিআর

আরডিএ বাগান নিষিদ্ধ পপি ফুল পপি ফুল পপি ফুলের চাষ রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

৯০০তম গোলে ইতিহাস গড়লেন রোনালদো
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০৪

সম্পর্কিত খবর