অকৃতকার্যদের প্রমোশন, দর্শন বিভাগে প্রশ্নপত্রের মানবণ্টনে পরিবর্তন ও স্থায়ী সমাধানসহ তিন দফা দাবিতে আবারও নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে আমরণ অনশন কর্মসূচীতে নেমেছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২২মার্চ) দুপুর থেকে নীলক্ষেত মোড়ে ৭২ ঘণ্টা পর আবারও আন্দোলনে অংশ নেয় তারা। অন্যদিকে এই আন্দোলনকে ঘিরে নীলক্ষেত ও আশপাশ এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবীগুলো হলো করোনা সংক্রমনের কারণে সিজিপ ১৯-২০,১৮-১৯,১৭-১৮ সেশনের প্রকাশিত সকল বিভাগের অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন দিতে হবে। দর্শন বিভাগের প্রশ্নের মানবণ্টন পরিবর্তন করতে হবে। ১০০ মার্কের পরিবর্তে ৮০ মার্কের পরীক্ষা নিতে হবে এবং ২০ মার্ক ইনকোর্সের মাধ্যমে যোগ করতে হবে। গণহারে ফেল করার কারণ ও প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং এর স্থায়ী সমাধান করতে হবে।
এ বিষয়ে আন্দোলনরত ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রবিন বলেন, আমরা করোনাকালে মাত্র ২ মাস ক্লাস করতে পেরেছি। ৪ ঘণ্টার পরীক্ষা আমরা ২ ঘণ্টায় দিয়েছি। প্রশ্নের উত্তর জানা থাকলেও সময়ের অভাবে আমরা উত্তর দিতে পারিনি। ফলে গণহারে ফেল আসে। আমরা এর আগে কর্মসূচি পালন করেছি ও সাত কলেজের অধ্যক্ষ ও কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি, কিন্তু আশানুরূপ কোনো ফল পাইনি।
বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মাছুমা আক্তার মুন বলেন, করোনার জন্য আমারা দীর্ঘ সেশনজটে পড়েছি এবং যে পরীক্ষা ২০২০ সালে দেওয়ার কথা আমরা তা ২০২১ এর শেষে এসে দিতে পেরেছি। চার ঘণ্টার পরীক্ষা ২ ঘণ্টায় দেওয়ার ফলে ফলাফল বিপর্যয় ঘটে এখন আমাদের পরবর্তী বর্ষে প্রোমোশন না দিলে পড়াশুনা বাদ দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। আমরা সাত কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাদের কোনো সমাধান না দেওয়ার ফলে আমরা আবারও আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।
ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী তানজিলা বলেন, আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামি, রেজাল্ট ধ্বসের পর প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, ডিপার্টমেন্টে গিয়েছি। কিন্তু কোনো সদুত্তর পাইনি। তাই বারবার নীলক্ষেতে জড়ো হতে হয়। আমাদের দুইজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। আমরা আমাদের নৈতিক দাবি নিয়ে এখানে দাঁড়িয়েছি। এই অন্ধকার ভবিষ্যত থেকে মুক্তির উপায় খুঁজছি।
নীলক্ষেতে মোড়ে দায়িত্বরত নিউমার্কেট থানার এএসপি মো. শরিফ বলেন, সকাল থেকেই তাদের আন্দোলনের কারণে রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বারবার সমন্বয় করার চেষ্টা করছি কিন্তু তারা তাদের আন্দোলনের ব্যাপারে অটল। এটা যেহেতু ছাত্র আন্দোলন তাই আমরা কোনো ধরনের অ্যাকশনে যেতে পারছি না।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে কথা বলতে অসঙ্গতি প্রকাশ করে।