আদালতের হাজতখানা থেকে মাদক মামলার আসামির পলায়ন
২৩ মার্চ ২০২২ ১৯:৫৯
ঢাকা: ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের হাজতখানা থেকে সাইফুল ইসলাম নামে মাদক মামলার এক আসামি পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট আদালত সূত্রে জানা গেছে, ৫০ পুরিয়া (৫ গ্রাম) হেরোইনসহ সাইফুল ইসলামকে গত সোমবার (২১ মার্চ) কদমতলী থানার তুষারধারা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (২২ মার্চ) দুপুরে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে কদমতলী থানা পুলিশ সাইফুলকে আদালতে পাঠায়। সেখান থেকে মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১টা থেকে ২টার মধ্যে যেকোনো সময় পালিয়ে যান সাইফুল।
মঙ্গলবার পালালেও বুধবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় বিষয়টি জানা গেছে আদালত সূত্রে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। সাইফুলের বিরুদ্ধে দায়ের করা মাদক মামলাসহ তার পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারের কপি সারাবাংলার কাছে রয়েছে।
বুধবার কোতোয়ালি থানার মামলার এজাহারটি আদালতে আসে। এরপর ঢাকার মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ ছিদ্দিকের আদালত এজাহারটি গ্রহণ করেন। তিনি কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কিরণ মিয়াকে মামলাটি তদন্ত করে আগামী ৯ মে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে মাদক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কদমতলী থানার এসআই এস এম জহিরুল আলম সারাবাংলাকে জানান, সাইফুল ইসলামকে হেরোইনসহ আমরা গ্রেফতার করি। গতকাল (মঙ্গলবার) তাকে আদালতে পাঠানো হয়। তিনি আদালতের হাতজখানা থেকে পালিয়েছেন। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলাও হয়েছে। পালাতক সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, আদালতের হাজতখানা থেকে আসামি পালানোর কথা অস্বীকার করছে আদালতে কর্তব্যরত পুলিশ। সিএমএম আদালতের পুলিশ পরিদর্শক নাহিদ হাসান সারাবাংলাকে বলেন, আমরা আসামি পাইনি। থানা থেকেই আসামি পালিয়েছেন। আমাদের কাছে আসেননি। এর বাইরে আমরা কিছু বলতে পারব না।
আদালতে কর্তব্যরত পুলিশের এমন বক্তব্যের বিপরীত বক্তব্য অবশ্য পাওয়া যাচ্ছে কদমতলী থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে। সাধারণ নিবন্ধন শাখা বলছে, আসামিকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার হাতের আঙুলের ছাপও (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) নেওয়া হয়। পরে দেখা যায়, আসামি নেই। হাজতখানা থেকে পালিয়ে গেছে।
এদিকে, সাইফুল ইসলাম পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় কদমতলী থানার এএসআই শেখ জাহিদুর রহমান বাদী হয়ে দণ্ডবিধির ২২৪ ধারায় কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় সাইফুলসহ থানার অন্যান্য আসামিদের হাতকড়া পরিয়ে সরকারি প্রিজন ভ্যানে করে দুপুর সোয়া ১টার দিকে সিএমএম কোর্টের হাজতখানায় আনা হয়। সেখানে কর্মরত পুলিশের সিআইডি ইউনিট আসামিদের হাতকড়া খুলে তাদের ফিঙ্গারপ্রিন্টসহ ছবি তোলে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, পরে আসামিদের বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য দ্বিতীয় তলার হাজতখানার সামনের করিডোরে রাখা হয়। সেখানে থাকা অন্য আসামিদের সঙ্গে সাইফুল মিশে যান। কদমতলী থানার আসামিদের জমা দেওয়ার সময় সাইফুলকে না পেয়ে হাজতখানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা ও বাহিনী আসামিকে খুঁজেও তার কোনো সন্ধান পায়নি।
সারাবাংলা/এআই/টিআর