Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কিশোরী ক্ষমতায়নের অন্যতম বাধা বাল্যবিয়ে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৩ মার্চ ২০২২ ২০:২৯

ঢাকা: কিশোরী ক্ষমতায়নের পথে বাল্যবিয়েকে অন্যতম বাধা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এর ফলে কিশোরীরা তাদের স্বাভাবিক জীবন হারিয়ে ফেলে। নিজেদের স্বাধীনতা বলতে তেমন কিছুই থাকে না। তবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও কিশোরীদের ক্ষমতায়িত করতে পারে। পাশাপাশি কিশোরীদের ক্ষমতায়িত করার ক্ষেত্রে সমাজিক পরিবেশ ও আশপাশের উদাহরণ বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। বুধবার (২৩ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইডিএস সম্মেলন কক্ষে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

সেমিনারে ‘স্কিলস দ্যাট এমপাওয়ার: মেজারিং চেঞ্জ ইন দ্য কনটেক্স অব ইন্টারভেনশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন আমেরিকার পপুলেশন কাউন্সিলের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট সাজেদা আমিন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন।

সাজেদা আমিন জানান, ‘বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন ফর লাইফস্কিল ইনকাম অ্যান্ড নলেজ ফর অ্যাডোলোসেন্স (বালিকা)’ প্রকল্পের আওতায় ১২ থেকে ১৯ বছর বয়সী ৯ হাজার কিশোরীর ওপর গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। গবেষণার সময়কাল ছিল ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল। তিনি বলেন, কিশোরীদের ক্ষমতায়িত করার ক্ষেত্রে সামাজিক সহায়তা, সামাজে অংশগহণ, স্বাধীন পারিবারিক পরিবেশ, তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার, পরিবার ও সমাজে কম বৈষম্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

গবেষণাপত্র উপস্থাপনের সময় সাজেদা আমিন বলেন, বাল্যবিয়ে এ দেশের কিশোরীদের জন্য একটি বড় সমস্যা। কেননা এর ফলে তারা তাদের স্বাভাবিক জীবন হারিয়ে ফেলে। নিজেদের স্বাধীনতা বলতে তেমন কিছুই থাকে না। এছাড়া শিশু শ্রমসহ আরও নানা বাধার কারণে তাদের বিকাশ ঘটে না। এ অবস্থায় আমরা দেশের তিনটি জেলায় প্রকল্পের মাধ্যমে গবেষণা চালিয়েছি। গবেষণায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে গ্রামের কিশোরীদের বিভিন্ন রকম শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। যেমন— তাদের সচেতন করে তোলা, জেন্ডার সমতা বিষয়ে জ্ঞান দেওয়া এবং তাদের জীবনভিত্তিক দক্ষতা উন্নয়ন সংক্রান্ত শিক্ষা দেওয়া হয়। রক্তচাপ পরিমাপ করা, মোবাইল সার্ভিসিং, খেলাধুলা, গান-বাজনা শেখানো ইত্যাদি বিষয় এর অন্তর্ভুক্ত ছিল।

বিজ্ঞাপন

এর প্রভাব তুলে ধরে তিনি বলেন, দেখা গেছে— এসব শিক্ষার ফলে মেয়েরা নিজেদের গ্রামে মেয়েদের ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে, যেটি আমরা প্রকল্প থেকে তাদের বলিনি। কোনো গ্রামে আবার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছে। এসব করতে গিয়ে গবেষণায় অংশ নেওয়া কিশোরীদের ৩১ শতাংশের ক্ষমতায়ন হয়েছে বলে উঠে এসছে। সেই সঙ্গে কিশোরীরা যদি শিক্ষিত হয়, তাহলে তারা তাদের মা-বাবার মনোভাব পরিবর্তনেও ভূমিকা রাখতে পারে।

সাজেদা আমিন আরও বলেন, গ্রামে যদি কোনো মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে তাহলে সে মেন্টর হিসেবে কাজ করে। তখন অন্য মেয়েরা মনে করে, তিনি তো পড়ছেন। কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তাহলে আমরাও পড়ব। এভাবে তাদের মধ্যে সাহস তৈরি হয়। এছাড়া প্রকল্পটি দুই বছর পরিচালনার পর কিশোরীদের ক্ষেত্রে সামাজিকভাবে দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে  প্রকল্প এলকায় বসবাসরত সমাজের ৩৭ শতাংশ মানুষের।

ড. বিনায়ক সেন বলেন, গবেষণা থেকে যা বোঝা গেল— শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা যেমন গালর্স গাইড ও গার্লস স্কাউটিং কিশোরীদের ক্ষমতায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও কিশোরীদের ক্ষমতায়ন করতে পারে।

তিনি বলেন, এ গবেষণায় তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, শিক্ষা, জেন্ডার ও জীবনাচরণ। কিশোরীদের  ক্ষতায়নে এনজিও, পাঠাগার, খেলার মাঠ, বাড়ি, বাজার ও ব্যাংকের সঙ্গে সম্পৃক্ততা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সামাজিক ক্ষেত্রে পরিবারের বাইরের যোগাযোগ খুব গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাইরে খেলাধুলা ও সমাজের বিভিন্ন ইস্যুতে অংশগ্রহণ কাজে লাগে। এছাড়া সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন এবং কম্পিউটার শিক্ষাও কিশোরীদের ক্ষমতায়নের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

কিশোরী ক্ষমতায়ন টপ নিউজ বিআইডিএস

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ভারত থেকে ফিরলেন ৯ বাংলাদেশি তরুণী
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:২৩

আজ জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেবেন ড. ইউনূস
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:০৪

সবজি-মুরগির বাজার চড়া, অধরা ইলিশ
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:১০

সম্পর্কিত খবর