‘পদত্যাগ করুন, নইলে পালাবার পথ পাবেন না’
২৩ মার্চ ২০২২ ২৩:০২
ঢাকা: কৃতকর্মের জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে পদত্যাগ না করলে সরকার পালাবার পথ পাবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (২৩ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে পেশাজীবীদের ভুমিকা: বর্তমান প্রেক্ষিত’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা আয়োজন করে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন পেশাজীবী সমন্বয় কমিটি।
‘বিএনপিকে তওবা করে নির্বাচনে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে’- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যেভাবে মানুষ হত্যা করেছেন, অত্যাচার-নির্যাতন করেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটক রেখেছেন, ৩৫ লাখ রাজনৈতিক কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন এবং ৬ শ’র বেশি মানুষকে গুম করে যে পাপ করেছেন, সেই পাপের জন্য জনগণের কাছে করজোরে ক্ষমা চান এবং পদত্যাগ করুন। অন্যথায় পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না।’
‘এজন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ঐক্যের। আমরা আহবান জানিয়েছি সমস্ত রাজনৈতিক দলকে, সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিকে, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে, সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে- আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই’- বলেন বিএনপির মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করি, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মুক্ত করি, ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা রয়েছে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করি এবং দেশে সত্যিকার অর্থেই একটা জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করে জনগণের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করি, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে যখন মানুষ ট্রাকের সামনে লাইন দিচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের জন্য, চাল-ডাল-তেল-লবনের জন্য যখন মানুষ আহাজারি করছে সেই সময় আবার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে, আবার প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বাড়িয়ে নেবার ষড়যন্ত্র করেছে জনগণের পকেট কেটে জনগণের দুর্ভোগের মধ্যে ফেলে। এই সরকার এবং তাদের মদদপুষ্ঠ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে জনগণকে পুরোপুরিভাবে দুঃসহ অবস্থার মধ্যে ফেলেছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে যদি রক্ষা করতে হয়, ১৯৭১ সালে যে লক্ষ্যে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম সেই লক্ষ্যকে যদি ফিরিয়ে আনতে হয়, জনগণের অধিকারগুলো যদি ফিরিয়ে আনতে হয়, আমাদের ভোটের অধিকার যদি ফিরিয়ে আনতে হয়, আমাদের বেচে থাকার অধিকার যদি ফিরিয়ে আনতে হয় তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
দেশে গ্যাসের মজুদ থাকা সত্বেও তা উত্তোলন না করে মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাদের উদ্দেশ্য গ্যাস বিদেশ থেকে আমদানি করা। কারা আমদানি করছে? এই সরকারের যারা উপদেষ্টা, এই সরকারের প্রশ্রয় নিয়ে যারা একছত্র ব্যবসা করছে তারা আজকে গ্যাস আমদানি করছে। সুতরাং তাদের দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য আজকে সেটা জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
বিএনপির স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে পেশাজীবী সমন্বয় কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, পেশাজীবী নেতা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, শওকত মাহমুদ, আব্দুল কুদ্দুস, এম আবদুল্লাহ, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডী, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, ডা. রফিকুল ইসলাম, আবদুল হালিম, নুরুল আমিন রোকন, রফিকুল ইসলাম, একেএম জহিরুল ইসলাম, কাজী সাখাওয়াত হোসেন, জাকির হোসেন, জাহানারা সিদ্দিকী, ফখরুল আলম, বিপ্লব উজ্ জামান বিপ্লব, তানভীরুল আলম প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/একেএম