পাট নিয়ে গবেষণায় ঢাবি-জনতা জুট মিলসের মধ্যে চুক্তি সই
২৩ মার্চ ২০২২ ১৯:৩৫
ঢাকা: পাট চাষ ও পাটের আঁশ উন্নয়নে প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে জনতা জুট মিলস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে। বুধবার (২৩ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে এই চুক্তি সই হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইয়ারুল কবীর এবং জনতা জুট মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ বশির উদ্দিন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই সমঝোতা স্মারকে সই করেন। এ সময় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যকার সম্পর্ক সেভাবে গ্রো করেনি। জনতা জুট মিলস লিমিটেডকে আমি ধন্যবাদ জানাই। এই উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার হবে এবং জাতি অনেক উপকৃত হবে।’
এদিকে, জনতা জুট মিলস কর্তৃপক্ষ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তারা পাটের আবাদ ও ফলন বাড়ানোর ক্ষেত্রে পাটকে এক ফসলি কৃষিপণ্য থেকে দুই ফসলি কৃষিপণ্যে রূপান্তর করতে চায়। বর্তমানে পাট এক ফসলি হওয়ার প্রধানতম কারণ হলো পানির প্রাপ্যতার ওপর নির্ভরতা। পাট কাটার পর পাটের জাগ সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে পানির প্রাপ্যতা, পানির পরিমাণ এবং পানির গুণগত মানের ওপর। দেশে দীর্ঘদিন ধরে সময়মতো পানি প্রাপ্যতার সমস্যার কারণে পাটের আবাদি জমির পরিমাণ দিন দিন কমছে এবং একইসঙ্গে এই সমস্যা পাটের ফলন এবং আঁশের গুণগত মানকেও নিম্নমুখী করছে।
জনতা জুট মিলস বলছে, এখন পাটকে দুই ফসলি কৃষিপণ্যে রূপান্তরের প্রধান নিয়ামক হবে পানির প্রাপ্যতার ওপর পাটের জাগ দেওয়ার নির্ভরতা সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করে দেওয়া। এই নির্ভরতা নির্মূল করা যাবে তখনই যখন বছরের যেকোনো সময় পাট কেটে জাগ দেওয়া সম্ভব হবে। এর জন্য একটি প্রযুক্তিগত সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পাট জাগের চলমান পদ্ধতিতে সময়োপযোগী ও সাশ্রয়ী প্রযুক্তিনির্ভর পরিবর্তন আনাই এক্ষেত্রে একমাত্র সমাধান বলে জনতা জুট মিল মনে করে। পাট জাগের ক্ষেত্রে এই পরিবর্তনের প্রযুক্তিগত পদ্ধতি নির্ণয় নিয়ে জনতা জুট মিলস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগকে সঙ্গে নিয়ে একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজ শুরু করেছে।
জনতা জুট মিলস জানিয়েছে, পাট জাগের প্রযুক্তিনির্ভর নতুন উপায় বের করার পাশাপাশি পাটের সুতা তৈরির ক্ষেত্রেও পাটের আঁশের কন্ডিশনিংয়ে নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার নিয়ে কাজ হচ্ছে। এই গবেষণা পাটের সুতার উৎপাদন ও সুতার গুণগত মানে আমূল পরিবর্তনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। পাটের আঁশের কন্ডিশনিং করা একটি অতি জরুরি ধাপ, যেখানে পাটের আঁশে এক ধরনের মাইক্রোবায়াল কাজ হয়। এই মাইক্রোবায়াল কাজটি দ্রুত, সহজ ও সাশ্রয়ী এবং সর্বোপরি পাটের আঁশের ইউনিফর্ম কন্ডিশনিং করার চেষ্টার অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগ আরও একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা করছে।’
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. হাসিনা খান এবং অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আরআইআর/পিটিএম