Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘রাজাকারের সন্তান মেধাবী হলেও সরকারি চাকরি পেতে পারে না’


১৫ এপ্রিল ২০১৮ ১৪:৪৭

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, রাজারকার, আল-বদর, আল-শামস বাহিনীর সদস্যদের সন্তান মেধাবী হলেও তারা সরকারি চাকরি পেতে পারে না। তিনি বলেন, বড় পদে গেলে আমরা যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছি, সেই বাংলাদেশকে তারা ধবংস করে দেবে, বাংলাদেশকে তারা পিছিয়ে দেবে। দেশের স্বাধীনতা থাকবে না, তারা পাকিস্তানিদের সঙ্গে আঁতাত করে দেশকে জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করবে।

রোববার (১৫ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত গণজমায়েত ও মিছিল কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। শ্রমিক-কর্মচারী পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম সমন্বয় পরিষদের এই কর্মসূচি পালন করে।

শাজাহান খান বলেন, আদর্শহীন মেধা, আদর্শহীন রাজনীতি এবং আদর্শহীন রাষ্ট্র পরিচালক দেশ ও জনগণের কল্যাণ করতে পারে না। বাংলাদেশে অনেকে মেধাবীই আছেন যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় এসেছিলেন। তারা কী করছেন- না করেছেন বাংলার জনগণ তা জানেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ফার্স্টক্লাস ফার্স্ট হননি। আমরা যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছি, আমরা কেউ ফার্স্টক্লাস ফার্স্ট হয়নি। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনায় আমরা দক্ষতা প্রমাণ করেছি।

শাজাহান খান বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের নামে কিছু লোক ভিসির বাড়িতে আক্রমণ করেছে, সেখানে ভাঙচুর চালিয়েছে, অগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ভিসি ও তার সন্তানদের খুঁজে বের করে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে তারা সেখানে গিয়েছিল। এরা কারা, এদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

“আমাদের সন্তানদের বলব, তোমরা মুক্তিযুদ্ধাদের সম্মান না দেখাতে পারো কিন্তু তোমরা তাদের অপমান করতে পারো না। এই আন্দোলনের মাধ্যমে এমন কিছু স্লোগান উচ্চারিত হয়েছে যা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে আঘাত করে। এর মধ্যে অনেকেই চেষ্টা করেছেন, ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে। তাদেরও চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।”

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রোকেয়া প্রাচী, মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসমত কাদের গামা, মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন (বিচ্ছু জালাল), জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী।

আবেদ খান বলেন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধার দেশ হিসেবে আল-বদর, রাজাকারের দেশ হতে পারে না। স্বাধীনতাবিরোধী ও রাজাকারের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রায়ত্ত করতে হবে।

রোকেয়া প্রাচী বলেন, আমাদের পতাকা ও স্বাধীনতা কোনো যুদ্ধপরাধীর হাতে তুলে দিতে পারি না। এই বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির। এখানে যুদ্ধপরাধী ও স্বাধীনতা বিরোধীদের কোনো ঠাঁই নেই।

ইসমত কাদের গামা বলেন, খালেদা জিয়া রাজনৈতিক কারণে নয় এতিমদের টাকা চুরি করার কারণে জেলে গিয়েছেন।

সভায় বক্তারা আরও বলেন, কোটা সংস্কারের নামে যারা নৈরাজ্য করেছে তাদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে যারা সরকারি চাকরিতে থেকে সরকারের উন্নয়ন ব্যহত করছে এবং মুক্তিযুদ্ধ ও সরকারবিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে তাদের চিহ্নিত করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে।

সভা শেষে নৌমন্ত্রী ৬টি দাবি জানান এবং এসব দাবি বাস্তবায়নে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, কোটা সংস্কারের নামে অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের বিচারের আওতায় আনা, জামায়াত-শিবির ও স্বাধীনতাবিরোধীদের সন্তানদের সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া বন্ধ করা, যুদ্ধপরাধীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা।

সারাবাংলা/জিএস/এটি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর