লিসবনে বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে ‘গণহত্যা দিবস’ পালন
২৬ মার্চ ২০২২ ২০:৫৭
লিসবনের বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতা ও কাপুরুষোচিত হামলার স্মরণে ‘গণহত্যা দিবস’ দিবস পালন করেছে। এ উপলক্ষ্যে দূতাবাসে সেমিনার, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের আয়োজন করা হয়।
শুক্রবার (২৫ মার্চ) বিকেলে দূতাবাসে আয়োজিত ‘৫১ বছরে বাংলাদেশ: স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং গণহত্যা’ শীর্ষক সেমিনারে সংসদ সদস্য, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা ও কর্মীবৃন্দ, প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতা এবং দূতাবাসের কর্মকর্তারা অংশ নেন। সেমিনারের শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সব শহিদদের স্মরণে একমিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান বক্তব্যের শুরুতে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দ্যেশেই ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালরাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কুখ্যাত ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর নামে গণহত্যা শুরু করে।’ এসময় তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সংগঠিত গণহত্যাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি আহ্বান জানান।
সেমিনারে মূল বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পর্তুগিজ সংসদ সদস্য ড. পাওলো নেভেস এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শিব কুমার সিং। ড. সিং বাংলাদেশের গণহত্যার বিভিন্ন দিক বিশেষকরে অমানবিকীকরণ (dehumanization), উচ্ছেদ (extermination) এবং অস্বীকারের (denial) দিকগুলি বিশদভাবে বর্ণনা করেন এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কৃতকর্মের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন। তিনি জাতিসংঘ সহ অন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহকে অবিলম্বে বাংলাদেশের গণহত্যাকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেবারও আহ্বান জানান।
সংসদ সদস্য ডা. পাওলো নেভেস তার বক্তব্যে ২৫ মার্চের ভয়াল কালরাতে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সেমিনারে স্বাধীন বাংলাদেশের অর্জনসমূহ, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের যুদ্ধকালীন গণহত্যার ফুটেজ এবং বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতির বিষয়ে কয়েকটি ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরবর্তীতে অতিথিদের মধ্যে “Bangladesh Genocide Revisited” এবং “Recognizing the 1971 Bangladesh Genocide” শীর্ষক পুস্তিকাও বিতরণ করা হয়।
আলোচনা সভা শেষে গণহত্যায় নিহতদের স্মরণে দূতাবাসে একটি আলোর মিছিল বের করা হয়। আমন্ত্রিত অতিথিরা প্রজ্জ্বলিত মোমবাতি হাতে এ মিছিলে অংশ নেন। মিছিল শেষে অতিথিরা দূতাবাস প্রাঙ্গনে আয়োজিত “গণহত্যা -১৯৭১” শীর্ষক আলোক চিত্রপ্রদর্শনীটি ঘুরে দেখেন এবং পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ও তাদের স্থানীয় দোসরদের চালানো নির্মম গণহত্যার ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করেন।
সারাবাংলা/এমও