Wednesday 11 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশ নিয়ে কোনো খেলা কেউ খেলতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৬ মার্চ ২০২২ ২১:৩০

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ নিয়ে আর কোনো খেলা কেউ খেলতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কখনো কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। বাংলাদেশ যে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, ইনশাল্লাহ তা এগিয়ে যাবে।

শনিবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর চারদিনব্যাপী সমাপণী অনুষ্ঠানে উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রান্তে যুক্ত থেকে চারদিন ব্যাপী সমাপণী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসি। তার আগে ২০০১ থেকে ২০০৮ আরেকটা অন্ধকার যুগে প্রবেশ করেছিল এদেশের মানুষ।’

‘২০০৯ সাল থেকে ২০২২, বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা বারবার ভোট দিয়ে আমাদেরকে তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছে বলেই ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করার সুযোগ পেয়েছি। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করার আমরা সুযোগ পেয়েছি। যদিও করোনাভাইরাসের কারণে অনুষ্ঠানমালাগুলি সীমিত আকারে আমাদের করতে হয়েছে এবং আমরা ২০২২ সাল পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। অনুষ্ঠানগুলো আমরা যেভাবে করতে চেয়েছিলাম, করোনা মহামারি বা অতিমারির কারণে আমরা সেভাবে করতে পারিনি।কিন্তু তারপরও আমরা থেমে থাকিনি’— বলেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এটি আমার জন্য অত্যন্ত গৌরবের। স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী উদযাপন করার সুযোগ পেয়েছিলাম ১৯৯৭ সালে আর এবার আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করার সুযোগ পেয়েছি।’

‘বাংলাদেশের ইতিহাসে উন্নয়নের যাত্রা যদি আপনারা হিসাব করেন ৫০ বছরে মধ্যে। কিন্তু ২৯ বছর উন্নয়ন হয়নি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন যুদ্ধবিধস্ত দেশ গড়ে তুলে তিনি উন্নয়নের পথে অগ্রযাত্রা শুরু করেছিলেন। এরপর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে তখন এদেশের মানুষের জীবেনে কিছুটা উন্নয়নের ছোঁয়া পায়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯-এ যখন আমরা সরকার গঠন করি পুনরায় তখন থেকে এই ১৩ বছরে আমরা যে লক্ষ্য স্থির করেছিলাম। ২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ যেন মধ্যম আয়ের দেশ হয় সেই লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছিলাম। আমরা আজকে যে স্বল্পোন্নত দেশ। জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে যুদ্ধবিধস্ত দেশ গড়ে তুলে জাতিসংঘ কর্তৃক স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা অর্জন করে দিয়েছিলেন। আবার আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। সব থেকে বড় কথা আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। আজকে শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে আমরা সক্ষমতা অর্জন করেছি। বাংলাদেশের প্রতিটি ঘর আজকে আমরা আলোকিত করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যে আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছে, আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম আজকে ঠিকই আমরা সেই আলোর পথের যাত্রা শুরু করে সমগ্র দেশের মানুষের প্রতিটি ঘরকে আলোকিত করার সক্ষমতা অর্জন করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের যে প্রজন্ম তাদের কাছে আমার এটাই থাকবে আহ্বান যে, আমরা কিন্তু পরিকল্পনা দিয়ে গেছি। যেমন— ২০০৮ সালে ২০২১ পর্যন্ত আমরা যখন পরিকল্পনা দেই সেটা বাস্তবায়ন করেছি। আমরা স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করেছি। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট আমরা করছি। অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে যাচ্ছি। মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছি। ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। বাংলাদেশকে যেন আর কখনো কেউ অবহেলা করতে না পারে। বাংলাদেশের মানুষ যেন বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। শিক্ষায়-দীক্ষায় জ্ঞানে, প্রযুক্তি জ্ঞানে, বিজ্ঞানে সবদিক থেকে আমরা যেন এগিয়ে থাকতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘এ এগিয়ে যাওয়া, এ গতি আমাদের ধরে রাখতে হবে। তাই আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা ২০৪১ সালের বাংলাদেশ কেমন বাংলাদেশ হবে, সেই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে দিয়েছি। তা বাস্তবায়নের জন্য পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা করে আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। ২১০০ সাল পর্যন্ত ডেল্টা প্ল্যান তৈরি করে দিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের টানা মেয়াদে দারিদ্র্যের হার কমানোর প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ‘একটি মানুষও গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না। জাতির পিতা যে লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন আমরা তা আজ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ, এই বাংলাদেশে আর কোনো মানুষেই গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না। সেটা আমরা নিশ্চিত করব। তার পথে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। এভাবেই আমরা বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব।’

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমাদের এই জাতীয় উৎসবের যে সমস্ত কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে সেটি উদযাপন করা হচ্ছে। তাই এ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ধন্যবাদ জানান তিনি।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর চারদিন ব্যাপী সমাপনী অনুষ্ঠানের সফলতা কামনা করে তিনি বলেন, ‘আমরা এই সুবর্ণজয়ন্তীর পথ ধরেই এগিয়ে যাব। শতবর্ষ উদযাপন করবে আমাদের আগামী দিনের প্রজন্ম।’

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রান্তে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া। দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে তা কিছুক্ষণ উপভোগ করেন।

সারাবাংলা/এনআর/একে

টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

নড়াইলে মাশরাফিসহ ৯০ জনের নামে মামলা
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৪০

সরকারের প্রথম একনেক ১৮ সেপ্টেম্বর
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:১৩

সম্পর্কিত খবর