Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফখরুলকে বেতারকেন্দ্রে যেতে দেয়নি পুলিশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৭ মার্চ ২০২২ ১৪:৫৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো: একাত্তরে স্বাধীনতা ঘোষণার প্রচারকেন্দ্র চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য যেতে পারেননি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পুলিশ শুরুতেই ফখরুলসহ বিএনপি নেতাদের আটকে দেয়। তবে এর আগেই তারা নগরীর ষোলশহরে বিপ্লব উদ্যানে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

রোববার (২৭ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাকর্মীরা বিপ্লব উদ্যানে যান। সেখানে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে গাড়ি নিয়ে ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রের উদ্দেশে রওনা দেন।

বিজ্ঞাপন

ষোলশহর দুই নম্বর গেটে পুলিশ তাদের গাড়ি আটকে দেয়। এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গাড়ি থেকে নেমে আসেন। তার সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বেতারকেন্দ্রে আর যেতে পারেননি। সেখান থেকেই ফিরে যেতে হয় ফখরুলসহ বিএনপি নেতাদের।

এদিকে ফখরুলের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডার সময় ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী সেখানে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশ অবশ্য তাদের সরিয়ে দেয়।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিপ্লব উদ্যানেই উনাদের (বিএনপি) শ্রদ্ধা জানানোর কর্মসূচি ছিল। সেখানে উনারা শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এরপর নির্ধারিত কর্মসূচি হচ্ছে পলোগ্রাউন্ড মাঠে সমাবেশ। কিন্তু ওনারা নির্ধারিত কর্মসূচির বাইরে বেতারকেন্দ্রে যেতে চেয়েছিলেন। সেখানে তো কোনো অনুমতি নেই। সেজন্য আমরা বলেছি, আপনারা নির্ধারিত কর্মসূচি পালন করেন। এর বাইরে কর্মসূচি পালনের অনুমতি নেই।’

বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে রোববার (২৭ মার্চ) দুপুরে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রের সামনে সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় তারা শুধু শ্রদ্ধা জানানোর কর্মসূচি ঘোষণা করে। বিএনপির কর্মসূচি ঠেকাতে আওয়ামী লীগ একইস্থানে দিনভর গণজমায়েত ও সমাবেশের ঘোষণা দেয়।

বিজ্ঞাপন

এ অবস্থায় শনিবার রাতেই বিএনপি সিদ্ধান্ত নেয়, তারা কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রে যাবে না। তারা বিপ্লব উদ্যানে ফুল দিয়ে এবং পলোগ্রাউন্ডে সমাবেশ করে কর্মসূচি শেষ করবে। পলোগ্রাউন্ডে সমাবেশের জন্য বিএনপি পুলিশের অনুমতিও নেয়।

বিপ্লব উদ্যানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। পুরো জাতিকে তিনি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে আহ্বান করেছিলেন। দীর্ঘ নয়মাস যুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হয়েছে। জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সেদিন যুদ্ধ হয়েছে। আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি। আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরতে চাই। এ জন্য আমরা কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রে যেতে আমাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ বেতারকেন্দ্রের সামনে দখল করে রেখেছে।’

‘আজ স্বাধীন দেশে আমরা স্বাধীনভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছি না। আজ দেশের মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছে না। মানুষ আজ অধিকারবঞ্চিত। যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি, ফ্যাসিবাদী সরকার আজ দেশ চালাচ্ছে। তারা স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করছে। কিন্তু আমরা বলতে চাই, কোনো ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জিয়াউর রহমানকে হেয় প্রতিপন্ন করা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা এই ফ্যাসিবাদি সরকারের পতন ঘটাব’— বলেন ফখরুল

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে মেজর জিয়াউর রহমান ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিকদের জড়ো করে এই ষোলশহরে এসে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। এটি কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। মেজর জিয়া কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। এটি যারা অস্বীকার করে, তারা মুক্তিযুদ্ধের, স্বাধীনতার ইতিহাসকে অস্বীকার করে। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসকে আমরা জনগণের কাছে তুলে ধরতে চাই।’

‘কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস প্রকাশ হলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি আর থাকে না। কারণ তারা দুর্বল। স্বাধীনতা ঘোষণা করার কথা ছিল, তখন যারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সেই আওয়ামী লীগের নেতাদের। সেটা তারা করতে পারেনি। দেশপ্রেমিক ও সাহসী মেজর জিয়া কারও কথা চিন্তা না করে বিদ্রোহ করেছিলেন। এটি আমরা জনগণের কাছে ‍তুলে ধরতে চাই। গায়ের জোরে সরকার টিকে আছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করতে চায়। জনগণকে বলব, আপনারা প্রকৃত ইতিহাসটা জেনে নিন।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব উদ্দিন খোকন, আব্দুস সালাম, মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির শাহাদাত হোসেন, আবুল হাশেম বক্কর এ সময় ছিলেন।

সারাবাংলা/আরডি/এএম

চট্টগ্রাম বেতারকেন্দ্র

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর