সাংবাদিক মনির হত্যায় আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন
২৭ মার্চ ২০২২ ১৮:০০
ঢাকা: বরিশালের মুলাদী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মনির হোসেন রাঢ়ী হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাসেল রাঢ়ীর সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রোববার (২৭ মার্চ) বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এসএম শাহজাহান, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত, আর রাষ্ট্রনিয়োজিত লিগ্যালএইডের প্যানেল আইনজীবী ছিলেন রিমি নাহরিন।
রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত সাংবাদিকদের জানান, ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের শুনানি শেষে আদালত জেল আপিল আংশিক মঞ্জুর করে আসামি রাসেল রাঢ়ীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে ২০ হাজাট টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মামলার আরেক আসামি রাসেলের বাবা আলাউদ্দিন রাঢ়ী কারাগারে মৃত্যুবরণ করায় তার নাম আপিল শুনানি থেকে বাদ দেওয়া হয়। এ মামলায় ২০১৬ সালে বরিশালের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন আলাউদ্দিন রাঢ়ী ও রাসেল রাঢ়ী। তারা সম্পর্কে বাবা ও ছেলে ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আলাউদ্দিন রাঢ়ী নিহত সাংবাদিক মনির রাঢ়ীর চাচাতো ভাই। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আলাউদ্দিনের আরেক ছেলে সোহাগ রাঢ়ীকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর মুলাদী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দলিল উদ্দিন ও আনোয়ার হোসেনের বাড়ির চলাচলের পথ বন্ধ করতে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করছিলেন আলাউদ্দিন রাঢ়ী ও তার ছেলেরা। এ সময় প্রতিবেশীরা চলাচলের পথ বন্ধ করার বিষয়টি মনির রাঢ়ীকে জানান। মনির প্রতিবেশীদের চলাচলের পথে প্রাচীর নির্মাণ না করতে আলাউদ্দিনকে অনুরোধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আলাউদ্দিন ও তার সন্তানেরা মনিরের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন এবং এক পর্যায়ে আলাউদ্দিনের নির্দেশে রাসেল কোদাল দিয়ে মনিরের মাথায় কোপ দেন। পরে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে মনির মারা যান।
এ ঘটনায় মনির রাঢ়ীর ভাই জসিম উদ্দিন মুলাদী থানায় আলাউদ্দিন, তার দুই ছেলে, স্ত্রী আলেয়া বেগম ও প্রতিবেশী মোতালেব রাঢ়ীকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন। এ মামলায় ২০১১ সালের ১৭ মার্চ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। পরে ২০১৪ সালের ২ জুলাই মামলার আসামি মোতালেব রাঢ়ী মারা যান এবং ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আসামি আলেয়া বেগমকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত। আদালত এ মামলায় আলাউদ্দিন এবং তার দুই ছেলে সোহাগ রাঢ়ী ও রাসেল রাঢ়ীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ গঠন করেন। সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে ২০১৬ সালে বরিশালের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম