স্ত্রীসহ দুই সন্তানকে খুন, মঠবাড়িয়ায় আলমগীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল
২৮ মার্চ ২০২২ ১৬:২৪
ঢাকা: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় উত্তর পাঠাকাতা গ্রামে নিজের পরকীয়ার জন্য স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাকে হত্যার দায়ে আলমগীর হোসেনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (২৮ মার্চ) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আসামির পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নির্মল কুমার দাস, শবনম মুশতারী ও তারিকুল ইসলাম হীরা।
রায়ে আদালত বলেছেন, ‘আসামি যেভাবে তার স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাকে হত্যা করেছেন, তা সমাজ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। এমন অপরাধ নমনীয় দৃষ্টিতে দেখার অবকাশ নেই। এমন হত্যাকারী আদালত থেকে অনুকম্পা পেতে পারেন না।’
আদালত বলেন, ‘সামাজিক অবক্ষয়ে নিজের পরকীয়ার কারণে আসামি তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে যেভাবে হত্যা করেছেন, তা হীন ও বিকৃত মানসিকতার। বর্বরোচিত ও অমানবিক এ পদ্ধতি (হত্যার) বিরলতম বিরল ক্ষেত্রে পরিণত করেছে। তাকে (আলমগীর) মৃত্যুদণ্ড দেওয়াই উপযুক্ত। তাই আসামি আলমগীর হোসেন আদালতের অনুকম্পা পেতে পারেন না।’
রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আসামি আলমগীরের বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় হাইকোর্ট তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন। নিজের পরকীয়ার কারণে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা করেছেন আলমগীর। তিনি ব্যথা কমানোর কথা বলে স্ত্রীকে ঘুমের ইনজেকশন পুশ করেন এবং দুই সন্তানকে খাবার স্যালাইনের মাধ্যমে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে তাদের হত্যা করেন। আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়ে তিনি এসব কথা বলেছন। আলমগীর যেভাবে তার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েকে খুন করেছেন, তা পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট বলে রায়ে বলা হয়েছে।’
মামলার বিবরণে জানা যায়, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার উত্তর পাঠাকাটা গ্রামের নিজ বাড়িতে ২০০৮ সালের ২২ জুন রাতে পেশায় পল্লি চিকিৎসক আলমগীর তার স্ত্রী হাফেজা বেগম, ছেলে আশরাফুল (১১) ও তিন বছর বয়সী মেয়েকে হত্যা করেন। এ ঘটনায় পরদিন হাফেজার ভাই মঠবাড়িয়া থানায় মামলা করেন। সেদিনই আলমগীরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে বেরিয়ে যান তিনি। জামিন নেওয়ার পর থেকে তিন পলাতক রয়েছেন। পরে ২০১৬ সালের ১ আগস্ট পিরোজপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত ওই মামলায় আলমগীরকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।
পরে আসামির মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এ ছাড়া খালাস চেয়ে আসামির পক্ষে আপিল করা হয়। আজ ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শেষে আসামি আলমগীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন হাইকোর্ট।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এনএস
আলমগীর হোসেন পিরোজপুর মৃত্যুদণ্ড বহাল স্ত্রীসহ দুই সন্তানকে খুন