Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার সম্পর্কে যা বললেন রিজভী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৮ মার্চ ২০২২ ১৬:৫৪

ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমদ এবং ঢাকা মহানগর পুলিশ প্রধান শফিকুল ইসলাম সভ্যতার সব সীমা লংঘন করে যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ, শিষ্টাচার বর্হির্ভূত অশালীন এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে দেশবাসী হতবাক।

সোমবার (২৮ মার্চ) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘পুলিশের অতিদলবাজ এই দুই কর্মকর্তাকে তাদের গর্হিত অপরাধের জন্য জাতি কোনোদিন ক্ষমা করবে না। প্রধানমন্ত্রীর কৃপা পেতে যে অমার্জনীয়-গর্হিত অপরাধ করেছেন তার মাসুল তাদেরকে দিতেই হবে।’

তিনি বলেন, ‘এক্সটেনশন সার্ভিসে থাকা ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তা চরম মাত্রাজ্ঞানহীন আচরণ ছাড়া কিছুই নয়। যে নোংরা ভাষায় পুলিশ কমিশনার কথা বলেছেন তা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী তো দূরের কথা কোনো ভদ্র পরিবারের সন্তানের পক্ষে উচ্চারণ করা সম্ভব নয়।’

‘স্বাধীনতার ঘোষক, বরেণ্য মুক্তিযোদ্ধা এবং সেক্টর কমান্ডারের সহধর্মিণী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে পুলিশ কমিশনার যে মন্তব্য করেছেন তাতে তার পিতামাতা যদি বেঁচে থাকেন তাহলে তারাও লজ্জিত ও বিব্রত হবেন। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট বেগম খালেদা জিয়ার মতো মহিয়সী নারীকে নিয়ে যারা অসম্মানসূচক বক্তব্য রাখেন তারা আত্মা বিক্রি করা মানুষ’— বলেন রিজভী।

তিনি বলেন, ‘শফিকুল ইসলামের চাকুরি শেষ হয়ে গিয়েছিল গত বছর। ২০২১ সালের ২১ অক্টোবর নিয়ম অনুযায়ী শফিকুল ইসলামের মেয়াদ শেষে অবসরোত্তর ছুটি প্রদানের প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে গুম, খুন অপহরণে পারদর্শী হয়ে ওঠায় বিনাভোটের সরকার তার সার্ভিস আরও প্রয়োজন মনে করে তাকে এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে। সেই অতিরিক্ত একবছর মেয়াদকালও শেষ হয়ে আসছে। ফলে আবারও চুক্তিভিত্তিক পুনঃনিয়োগ লাভের আশায় ভদ্রতার সকল সীমানা অতিক্রম করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিবেকবর্জিত বক্তব্য দিয়েছেন।’

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, ‘রাজারবাগের একই অনুষ্ঠানে পুলিশের আইজি বেনজীর আহমেদও বাংলা-ইংরেজি মিলিয়ে তীব্র্র রোষ নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ভাষায় দেশের আপামর গণতন্ত্রকামী মানুষকে ধমক দিয়েছেন। তাচ্ছিল্যভরে নানা কটু মন্তব্য করেছেন। পাকিস্তানি উর্দি পরা কর্মকর্তারাও এভাবে গণতন্ত্রকামী মানুষকে বাংলা-উর্দু মিলিয়ে ধমক দিতেন।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নির্দেশে গত ১৩ বছরে বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, আলেম-উলামা এবং ভিন্নমতের জনগণের ওপর দফায় দফায় যে গণহত্যা এবং খুন, গুম, জুলুম, নিপীড়ন চালানো হয়েছে তাতে বেনজীর আহমেদের ভূমিকা কি ছিল তা জনগণ ভালো করেই জানে। তিনি প্রকাশ্যে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলনরত মানুষকে গুলি করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। জনগণের প্রতি তার হুমকি এবং নির্দেশ দেওয়ার ভাষা এবং ভাবভঙ্গী দেখে মনে হতে পারে লোকটি হয়তোবা শেখ হাসিনার সাথে বাংলাদেশের মালিকানা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।’

রিজভী বলেন, ‘বেনজীর আহমেদের বন্দুক-পিস্তলের মাথায় যেহেতু গণতন্ত্রকামী বহু মানুষের জীবন-মৃত্যু নির্ভর করছে, সেহেতু তার সম্পর্কে আপাতত আর বেশি কিছু না বলাই নিরাপদ। তার ওপর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর জনগণ ভেবেছিলো কিছুটা হলেও দেশে গুম-খুনের ভয়ের পরিবেশ কেটে যাবে। কিন্তু গত পরশু তার বক্তব্যে বোঝা গেলো তিনি বাংলাদেশে বিদ্যমান কর্তৃত্ববাদী শাসনকে দীর্ঘস্থায়ী করতে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিতেও দ্বিধা করবেন না।’

তিনি বলেন, ‘একটি দেশে রাজনীতি, রাজনৈতিক সংস্কৃতি, রাজনৈতিক শিষ্টাচার হারিয়ে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এভাবেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে। দেশে এখন সেই অবস্থাই চলছে। দেশে কোনো সভ্য এবং গণতান্ত্রিক সরকার থাকলে চাকরি বিধি লঙ্ঘনের দায়ে এই দুই পুলিশ কর্মকর্তার এতক্ষণে জেলে না হলেও চাকরি থেকে পত্রপাঠ বিদায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি হয়নি, কারণ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদরা এখন সাইডলাইনে আর নিশিরাতের সরকারটি চলছে র‌্যাব-পুলিশের বন্দুকের ওপর ভর করে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/একে

আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর