জাবিতে পাওনা টাকা চাওয়ায় লন্ড্রিম্যানকে মারধর
২৮ মার্চ ২০২২ ২২:২৫
জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আ ফ ম কামাল উদ্দীন হলের কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে লন্ড্রিম্যান মাহবুব আলমকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। পাওনা টাকা চাওয়ায় তাকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মাহবুব আলম।
আ ফ ম কামাল উদ্দীন হলের লন্ড্রি রুমে গতকাল রোববার (২৭ মার্চ) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন মাহবুব আলম।
অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদুজ্জামান শাকিল ও অর্থনীতির ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জিসান আহমেদ রনি। এছাড়া আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সামিউল জয়ের বিরুদ্ধে ওই মারধরে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম কামাল উদ্দীন হলের আবাসিক ছাত্র ও শাখা ছাত্রলীগের কর্মী।
লন্ড্রিম্যান মাহবুব আলম বলেন, ‘করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত হলের ছাত্রদের কাছে তার প্রায় ১০ হাজার টাকা পাওনা। আমি পাওনা টাকা চাইলে তারা গড়িমসি করেন। ফলে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে হলে লন্ড্রির কাজ করব না বলে প্রাধ্যক্ষ স্যারকে লিখিতভাবে জানাই। পরে গত ২৬ মার্চ প্রাধ্যক্ষ স্যার হলে লন্ড্রি কাজ না করার নির্দিষ্ট কারণ জানতে চান। তখন সামিউল জয় ভাই পেছন থেকে গালি দিয়ে বলেন, বকেয়া টাকার কথা বললে তোকে মেরে হল থেকে বের করে দেবো। তবুও সাহস করে প্রাধ্যক্ষ স্যারকে পাওনা টাকার কথা বলি। তখন প্রাধ্যক্ষ স্যার হলের এক সিনিয়র ছাত্রলীগ নেতাকে আমার পাওনা টাকা আদায় করে দিতে বলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল রোববার রাতে সামিউল জয় ভাই রুমে ডেকে আমার পাওনা টাকা পরিশোধ করেন। আর আমাকে গালি দিয়ে হল ছেড়ে চলে যেতে বলেন। এরপর লন্ড্রি রুমে ফিরে এসে কাজ শুরু করি।’
মাহবুব আলম আরও বলেন, ‘পরে রাত আড়াইটার দিকে ফরহাদ, শাকিল ও রনি ভাই আসেন। তারা বলেন- তুই কোন হাত দিয়ে বকেয়া টাকা লিখছিস? আমি চুপ করে থাকায় রনি ভাই দরজার হাতল দিয়ে আমার ডান হাতে আঘাত করেন। এরপর বাকি দুইজনও মারধর শুরু করেন। পরে তারা শিক্ষার্থীদের বকেয়ার লিস্ট নিয়ে চলে যান। এ ঘটনাটি প্রাধ্যক্ষ স্যারকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘রাতে হলের লন্ড্রিম্যান মাহবুব আলমকে মারধর করা হয়েছে বলে শুনেছি। তার পিঠে ও হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
তবে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত ফরহাদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘লন্ড্রিম্যান মাহবুব আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। তাকে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত কেউ এমন কাজ করতে পারে না। বরং আমরা তার পাওনা টাকা আদায় করে দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘কেউ আমাকে এমন কোনো ঘটনা জানায়নি। তবে আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ও আ ফ ম কামাল উদ্দীন হলের প্রাধ্যক্ষ আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, মাহবুব আমাকে ফোন দিয়ে এমন ঘটনা জানিয়েছেন। আমি হলে গিয়ে পুরো ঘটনা খোঁজ নিয়ে দেখব।
সারাবাংলা/এনএস