স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
৩০ মার্চ ২০২২ ১৭:৩৪
বরিশাল: বরিশালে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বান্ধবীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় ওই ছাত্রীর মা মামলাটি করেন।
আসামিরা হলেন ওই ছাত্রীর সহপাঠী সাবিকুন নাহার শশী, তার মা ফাতেমা খানম চম্পা, নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মতাসার এলাকার তাওসিফ মাহমুদ স্বাধীন ও তার বন্ধু আসাদ ইসলামসহ অজ্ঞাত আরও ৪ জন।
বুধবার দুপুরে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এজাহারে বলা হয়, ওই ছাত্রী ও অভিযুক্ত শশী একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা দুজন নগরীর পেশকার বাড়ি এলাকার এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ত। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে শশীকে ডাকতে ওই ছাত্রী তার বাসায় গেলে তাকে মামলার আসামি আসাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলে। বিষয়টি কাউকে না জানাতে শশী তাকে অনুরোধ করে। এরপর থেকেই পরিকল্পিতভাবে শশী কয়েকজন বখাটেকে দিয়ে ওই ছাত্রীকে হয়রানি ও রাস্তাঘাটে আপত্তিকর প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত শুরু করে।
এ ঘটনার জেরে গত বছরের ১১ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে অভিযুক্তরা বিদ্যালয় লাগোয়া মল্লিক রোডে ডেকে নিয়ে তাকে যৌন হয়রানি করে। সম্প্রতি অভিযুক্তরা ওই ছাত্রীকে বিদ্যালয়ের ভেতর পুকুরপাড়ে নিয়ে মারধর করে ও তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালায়।
এসব ঘটনায় ওই ছাত্রী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এমনকি তার মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতাও দেখা যায়। পুরো বিষয়টি ওই ছাত্রীর বাবা মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত জানান।
তবে সাবিকুন নাহার শশী ও তার মা ফাতেমা খানম চম্পা অভিযোগ অস্বীকার করেন। ফাতেমা খানম চম্পা বলেন, ওই ছাত্রী ক্ষতি করতে আমার মেয়ের ছবি ও মুঠোফোন নম্বর বিভিন্নজনকে দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে সে আমাকে গালমন্দ করে।
সাবিকুন নাহার শশী বলে, মুঠোফোনে আমার মাকে অপমান করার কারণ আমি তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার হাতে আঘাত করে। তাই আমি তাকে একটা থাপ্পড় মেরেছি। এখন সামাজিকভাবে আমাদের হেয় করতে এসব অভিযোগ আনা হচ্ছে।
এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবা হোসেন বলেন, ঘটনার প্রায় ৭ মাস পর গত মঙ্গলবার দুপুরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে তার এক সহপাঠী ও তার মায়ের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে। তারা বিভিন্নভাবে ওই ছাত্রীকে হয়রানি করেছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। সত্যতা পেলে অভিযুক্ত ছাত্রীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম বলেন, মামলার আসামিদের গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে।
সারাবাংলা/একে