বাম নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন
১ এপ্রিল ২০২২ ১৬:০৭
জাবি: বাম ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাবির বাম ছাত্র সংগঠনগুলো।
শুক্রবার (১ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলো। এটি সঞ্চালনা করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম। মানববন্ধনের শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি রাস্তা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি ছবি চত্বর, নতুন কলা ভবন হয়ে মুরাদ চত্বরে এসে শেষ হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির জাবি শাখার সহ-সভাপতি সুমাইয়া ফেরদৌস। তিনি বলেন, গতকাল জাবির বটতলায় এক দোকানে দেখলাম দু’বছর আগের ও বর্তমান সময়ের বাজার খরচের একটা হিসাব টানানো আছে। দু’বছর আগে ওই দোকানে এক বেলা খাবার রান্না করতে খরচ হতো চার হাজার টাকা। বর্তমানে সেখানে খরচ হচ্ছে সাড়ে আট হাজার টাকা। দু’বছরের মাথায় দ্বিগুণেরও বেশি দ্রব্য মূল্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষের বেতন ভাতা, আয় ক্ষমতা আগের মতোই রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ জনগণ দোটানায় পরে আছে। লাগামহীন এই মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে যারা আন্দোলন সংগ্রাম করছেন সরকার তাদেরকে উল্টো শায়েস্তা করছে।
তিনি আরও বলেন, সংসদ সদস্যদের প্রায় সত্তর ভাগ ব্যবসায়ী হওয়ায় তারা ব্যবসায়ীক চিন্তা করেন কিন্তু জনগণের চিন্তা করেন না। যার ফলে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে তাদের কোনো নজর নেই।
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি রাকিবুল হক রনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ একটা ভুঁইফোড় সংগঠন। এরা নামে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ হলেও, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে তারা ঠিক মতো জানে না। এরা বলে বামপন্থিরা নাকি বার বার মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে। তারা জানে না শত শত ছাত্র ইউনিয়নের ও বামপন্থি ছেলে-মেয়ে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে, প্রাণ উৎসর্গ করেছে। বরং বামপন্থী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে মুজিব বাহিনী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে দেয়নি। ভুঁইফোড় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ সংগঠন যা খুশি তাই করবে, মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের অবদানকে অস্বীকার করার চেষ্টা করবে এইসব সহ্য করা হবে না। আমরা এর জবাব রাজনৈতিকভাবে দেবো।
তিনি আরও বলেন, গত ২৮ মার্চের হরতাল ছিল যৌক্তিক। আমরা আওয়ামী লীগ, বিএনপির মতো সহিংসতা করিনি। এই হরতালে দেশের সকল সাধারণ মানুষের সমর্থন ছিল। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, লাগামহীন বাজার ব্যাবস্থা থেকে মানুষের মনযোগ ফিরিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টায় বামপন্থি নেতাদের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে। ১২ জন ছাত্র নেতার নামের এই মিথ্যা মামলার প্রত্যাহার করতে হবে। না হলে রাজনীতির মাঠে দেখা হবে। না হলে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সঙ্গে ছাত্র ইউনিয়নের, ছাত্র ফ্রন্টের দেখা হবে।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন- সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তাসবিবুল গণি নিলয়সহ অর্ধশতাধিক বামপন্থি নেতাকর্মী।
উল্লেখ্য, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত সোমবার (২৮ মার্চ) সারাদেশে আধাবেলা হরতাল পালন করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। হরতালকে ঘিরে পুরানা পল্টনে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই হামলার প্রতিবাদে পরদিন দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেন।
সারাবাংলা/এনএস